জেদ্দায় আমেরিকার সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনায় খুশি ইউক্রেন
অনলাইন ডেস্ক
ওয়াশিংটনে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রকাশ্য বিতর্ক হলেও সৌদি আরবের আলোচনায় তার প্রভাব পড়েনি। সেখানে আমেরিকার সঙ্গে ইউক্রেনের প্রাথমিক আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে বলেই জানিয়েছেন জেলেনস্কি।
জেদ্দায় আলোচনায় আমেরিকার প্রস্তাব ছিল ৩০ দিনের সংঘর্ষ-বিরতি চুক্তি। ইউক্রেন জানিয়েছে, রাশিয়া যদি এই প্রস্তাব মেনে নেয়, তাহলে তাদেরও মানতে অসুবিধা নেই। তবে একইসঙ্গে আমেরিকাকে সামরিক সাহায্য দিতে হবে। আমেরিকা সেই শর্তে রাজি হয়েছে বলেই জানিয়েছেন জেলেনস্কি। এদিন এক ভিডিও বার্তায় চুক্তির বিস্তারিত তথ্য তিনি দিয়েছেন।
জেলেনস্কির কথায়, ‘এদিনের আলোচনায় আমেরিকার একটি প্রস্তাব দিয়েছে। শুধু কৃষ্ণ সাগরে নয়, কেবলমাত্র মিসাইল, ড্রোন বা বোমার ব্যবহার বন্ধ নয়, তারা চায় ৩০ দিনের সম্পূর্ণ সংঘর্ষ-বিরতি। আমাদের এতে কোনো আপত্তি নেই। যদি রাশিয়া প্রস্তাবে সম্মত হয়, আমরাও এই প্রস্তাব মানতে প্রস্তুত।’
ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা আলোচনা দলের সদস্য। তিনি সামাজিক মাধ্যমে লিখেছেন, আমেরিকার শর্ত মেনে নেওয়ার অর্থ এই নয় যে, সংঘর্ষ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেল। এটি শান্তির পথে প্রথম পদক্ষেপ। সকলে দেখুক কারা সেই রাস্তায় প্রথম পা ফেলল।
ইউক্রেনের পার্লামেন্টে জেলেনস্কির বিরোধীপক্ষও সরকারের অবস্থানকে সমর্থন করেছে। তাদের বক্তব্য, আমেরিকা এবং ট্রাম্পের সঙ্গে সমস্ত কূটনৈতিক আলোচনার রাস্তা খোলা থাকা জরুরি।
এদিকে, আশ্চর্যজনকভাবে এই আলোচনা থেকে বাদ রাখা হয়েছে ইউরোপীয় দেশগুলোকে। যা নিয়ে ইউরোপের কূটনৈতিক মহলে রীতিমতো আলোড়ন শুরু হয়েছে।
ইউক্রেনের থিংকট্যাংক নিউ ইউরোপ সেন্টারের ডিরেক্টর অ্যালিয়োনা গেটমানচুক। ডয়চে ভেলেকে তিনি জানিয়েছেন, জেদ্দায় দুইটি স্পষ্ট অস্ত্র নিয়ে পৌঁছেছিল ইউক্রেনের প্রতিনিধি দল। এক, এই যুদ্ধ তারা শুরু করেনি, রাশিয়া শুরু করেছে এবং রাশিয়া শান্তির পক্ষে নয়, এই কথাটি স্পষ্ট করা। দ্বিতীয়ত, বল রাশিয়ার কোর্টে ঠেলে দেওয়া। দু’টি বিষয়েই ইউক্রেন সফল হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
বস্তুত, ইউক্রেনের বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, ইউক্রেন যা চেয়েছিল তার চেয়ে বেশি পেয়েছে এই আলোচনা থেকে। আমেরিকা সামরিক সাহায্য দেওয়ার শর্ত মানতে হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের একাংশের ধারণা, রাশিয়া প্রাথমিকভাবে সংঘর্ষ-বিরতির প্রস্তাব মানতে বাধ্য হবে। কারণ, আমেরিকার সঙ্গে ইউক্রেনের আলোচনা যতটা সার্থক হয়েছে, রাশিয়া সেখান থেকে পিছিয়ে আসতে পারবে না। কিন্তু আশঙ্কা হলো, রাশিয়া ইউক্রেনের যে জমি ইতোমধ্যেই দখল করে বসে আছে, সে জমি তারা ছাড়তে চাইবে না। তারা চাইবে স্থিতাবস্থা। অর্থাৎ, এখন যার অবস্থান যেখানে সে সেখানেই থাকবে, এমন একটি প্রস্তাব রাশিয়ার কাছ থেকে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
সূত্র : ডয়চে ভেলে।