দাম নিয়ে বিপাকে কৃষক, আলু ক্ষেতেই পড়ে থাকার শঙ্কা
নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর
আলু নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছে রংপুর অঞ্চলের চাষিরা। মৌসুম শুরুর আগেই বাজারে আলুর দর পতনে শঙ্কিত হয়ে পড়েছে কৃষকরা। এ অবস্থা চলতে থাকলে এবার ক্ষেতের আলু ক্ষেতেই পড়ে থাকবে-এমনটা শঙ্কা করছেন আলু চাষিরা।
রংপুর নগরীর চিলমন এলাকার আলু চাষি গৌরাঙ্গ রায় বলেন, বর্তমানে বাজারে পাইরি আলু বিক্রি হচ্ছে ৭/৮ টাকা কেজি। খুচরা বিক্রি হচ্ছে ১০/১২ টাকা। এক দোন (২২ শতক) জমিতে আলুর বীজ লাগে ২৪ হাজার টাকার। রোপন, সার, উত্তোলন ইত্যাদির খরচ পরে ১৯ হাজার টাকা। এক দোন জমিতে মোট খরচ হয় ৪০ থেকে ৪২ হাজার টাকা। উৎপাদন হয় ২ হাজার থেকে ২ হাজার ২০০ কেজি। সেই হিসেবে এক কেজি আলু উৎপাদনে খরচ পড়ে ১৯ থেকে ২০ টাকা। হিমাগারে আলু রাখলে কেজি প্রতি আরও যোগ হবে ৮ টাকা। সব মিলিয়ে দেখা গেছে এক কেঝি আলু উৎপাদনে খরচ পড়ছে ২৮ টাকা। বর্তমান বাজারদর অনুযায়ী প্রতিকেজি আলুতে কৃষকদের লোকসান হচ্ছে ১৮ থেকে ২০ টাকা। এ ধারা অব্যাহত থাকলে লোকসানের ভয়ে কৃষকরা ক্ষেত থেকে আলু উত্তোলন নাও করতে পারেন। বর্তমানে কোনো কোনো আলু ক্ষেতের বয়স ৬০ থেকে ৭০ দিন হয়েছে। আর কদিন পরেই আলু উত্তোলনের ধুম পড়বে।
জানা গেছে, গত কয়েক বছর থেকে বাজারে আলুর দাম ভাল পাওয়ায় রংপুর অঞ্চলের কৃষকরা এবার বেশি পরিমাণ জমিতে আলুর আবাদ করেছেন। কৃষি অফিসের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে এবার আলুর আবাদ হয়েছে। বেশি জমিতে আলু রোপণ হওয়ায় দাম নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন চাষিরা।
রংপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় এবার আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল এক লাখ ৬০২ হেক্টর জমিতে। সেখানে আবাদ হয়েছে এক লাখ ১৯ হাজার ৮৩৯ হেক্টর। আলুর উৎপাদন হেক্টর প্রতি ২০ টনের বেশি হয়ে থাকে। এই পরিমাণ জমি থেকে প্রায় ২৮ লাখ মেট্রিক টন আলু উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। চার বছর আগেও এই অঞ্চলে এক লাখ হেক্টরের কম জমিতে আলু আবাদ হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আলুর আবাদ হয়েছে রংপুর জেলায়। বেশি পরিমাণ জমিতে আলুর আবাদ করায় দাম কমে যাওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল বলেন, এবার গত বছরের চেয়ে বেশি পরিমাণ জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন আলুর বাজার ভালো হবে।