দিনাজপুরে মাকিহারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ
আব্দুস সালাম, দিনাজপুর প্রতিনিধি ॥ দিনাজপুর সদর উপজেলার ১০ নং কমলপুর
ইউনিয়নের মাকিহারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম ফজলুল হকের বিরুদ্ধে
একাধিক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগ বাণিজ্য, জাল সনদ ব্যবহার,
গাছ বিক্রি করে অর্থ আত্মসাৎ, অনিয়মিত উপস্থিতি এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আয়ের
সঠিক হিসাব না দেওয়ার মতো গুরুতর অভিযোগগুলো উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবর
লিখিতভাবে জানানো হয়।
এ বিষয়ে স্থানীয় কয়েকজন দাতা সদস্য ও সচেতন এলাকাবাসীর দাবি, প্রধান শিক্ষক
বিদ্যালয়ের সভাপতির সহযোগিতায় এসএসসি ভোকেশনাল কোর্স চালুর নামে পাঁচজন
ব্যক্তির কাছ থেকে প্রায় ২৫ লাখ টাকা এবং তিনজন কর্মচারীর কাছ থেকে ৪৫ লাখ টাকা
নিয়েছেন। এছাড়া বিদ্যালয়ের গাছ বিক্রির মাধ্যমে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা আত্মসাৎ
করেছেন।
জেলা শিক্ষা অফিসারের স্বাক্ষর জাল করে একজন ভুয়া শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে
অভিযোগ উঠেছে, যেখানে সাদেক আলী নামক ব্যক্তির কাছ থেকে ১০ লাখ ৫০ হাজার টাকা
গ্রহণ করা হয়।
অনিয়মের ভিত্তিতে গত ১২ সেপ্টেম্বর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ
ফয়সাল রায়হান উপজেলা সমবায় অফিসার মো. হাফিজুর ইসলামকে তদন্তের দায়িত্ব দেন।
তদন্তের জন্য নির্ধারিত সময়সীমা পার হলেও এখন পর্যন্ত তদন্ত কার্যক্রমে কোনো অগ্রগতি
হয়নি। স্থানীয়রা এই বিলম্বে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ ফয়সাল রায়হান জানান, তদন্ত
প্রতিবেদন এখনো আমার কাছে জমা দেওয়া হয়নি। মামলার বর্তমান অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে
সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
তবে মাকিহারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এ কে এম ফজলুল হক অভিযোগ অস্বীকার
করেছেন। তিনি মোবাইল ফোনে জানান, তিনি শহরের বাইরে রয়েছেন এবং অভিযোগের
বিষয়ে পরে মন্তব্য করবেন।
তদন্ত কার্যক্রম বিলম্বের কারণ জানতে চাইলে উপজেলা সমবায় অফিসার মো. হাফিজুর রহমান
বলেন, মামলা চলমান থাকায় এ বিষয়ে মন্তব্য করা উপযুক্ত হবে না। তবে উপজেলা নির্বাহী
অফিসারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এলাকার বাসিন্দারা বলেন, দুর্নীতিগ্রস্ত নেতৃত্বের কারণে শিক্ষার্থীদের নৈতিক মূল্যবোধ
গড়ে উঠবে কীভাবে? এ ধরনের অনিয়ম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যৎকে হুমকির মুখে ফেলছে।
সরকারি পর্যায়ে যথাযথ পদক্ষেপ এবং দ্রুত তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করার দাবি জানাচ্ছেন
ভুক্তভোগী এবং স্থানীয় বাসিন্দারা।