পাকিস্তানকে আরেকটি সাবমেরিন হস্তান্তর চীনের
অনলাইন ডেস্ক
পাকিস্তানকে আরেকটি সাবমেরিন হস্তান্তর করেছে চীন। পাকিস্তান নৌবাহিনীর জন্য মোট আটটি সাবমেরিন কেনার চুক্তি করেছে একটি চীনা শিপইয়ার্ড কোম্পানি। এর মধ্যে দ্বিতীয় সাবমেরিন নির্মাণ সম্পন্ন করল কোম্পানিটি। যা দুই দেশের মধ্যে সামরিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে চলেছে।
চীনের রাষ্ট্রীয় মিডিয়া রবিবার এই তথ্য জানিয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ডিজেল-ইলেকট্রিক হাঙ্গর শ্রেণির এই সাবমেরিনটি বৃহস্পতিবার উহান শহরের ইয়াংজি নদীর তীরে চায়না শিপবিল্ডিং ইন্ডাস্ট্রি করপোরেশনের শিপইয়ার্ডে লঞ্চ করা হয়েছে।
পাকিস্তান মোট আটটি সাবমেরিন কেনার চুক্তি করেছে, যার মধ্যে শেষ চারটি পাকিস্তানের করাচি শিপইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কসে নির্মিত হবে। হাঙ্গর শ্রেণির সাবমেরিনকে চীনের ০৩৯এ সাবমেরিনের রফতানি সংস্করণ বলে মনে করা হয়। এটিতে ৩৮ জন ক্রু ও বিশেষ বাহিনীর জন্য অতিরিক্ত আটটি স্থান রয়েছে। এটি টর্পেডো ও জাহাজ ধ্বংসে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে সজ্জিত, যা পাকিস্তানের নৌশক্তিকে আরও শক্তিশালী করবে।
পাকিস্তান অতীতে ভারতের বিরুদ্ধে সাবমেরিন ব্যবহার করেছে, বিশেষ করে উত্তরের বিতর্কিত অঞ্চল নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চলমান সংঘর্ষের সময়। ইউরোপীয় দেশগুলোর ডুয়াল-ইউজ (সামরিক ও বেসামরিক) প্রযুক্তি রফতানির নিষেধাজ্ঞার কারণে পাকিস্তানের আধুনিক সামরিক সরঞ্জামের জন্য চীনই একমাত্র বিকল্প হয়ে উঠেছে।
একটি সুইডিশ সামরিক থিংক ট্যাঙ্কের তথ্যানুযায়ী, গত পাঁচ বছরে পাকিস্তানের অস্ত্র আমদানির ৮১ শতাংশের বেশি চীন থেকে হয়েছে। দুই দেশের যৌথ প্রকল্পগুলোর মধ্যে হাঙ্গর সাবমেরিন ও জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান উল্লেখযোগ্য।
এদিকে, চীন ও ভারত তাদের দীর্ঘদিনের হিমালয় সীমান্ত বিরোধ সমাধানের জন্য আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২০ সালে দুই দেশের মধ্যে মারাত্মক সংঘাতের পর এই বিরোধ আবারও উত্তপ্ত হয়, যদিও এই সমস্যা কয়েক দশক ধরে চলছে। সাম্প্রতিক সময়ে দুই দেশ শান্তিপূর্ণ সমাধানের দিকে এগোতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে।
চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করতে পারে। বিশেষ করে ভারতের জন্য এই উন্নয়ন একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। পাকিস্তানের সামরিক শক্তি বৃদ্ধির মাধ্যমে চীন দক্ষিণ এশিয়ায় তার প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
এই ঘটনাটি দক্ষিণ এশিয়ার ভূরাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। পাকিস্তানের সামরিক শক্তি বৃদ্ধি এবং চীন-ভারত সীমান্ত বিরোধের সমাধান নিয়ে আগামী দিনগুলোতে আরও আলোচনা ও উত্তেজনা দেখা দিতে পারে। সূত্র: এপি, গ্লোবাল টাইমস, নিক্কেই এশিয়া