পুলিশের কাছে ক্ষমা চাওয়ার শর্তে আটক ববি ছাত্ররা মুক্ত
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মোটরসাইকেল আটকের জের ধরে সংঘবদ্ধ ছাত্রদের হামলায় ট্রাফিক পুলিশের দুই সদস্য আহত হয়েছেন। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ ছাত্রকে পুলিশ আটক করে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (০৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কর্নকাঠী এলাকায় বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ রাখে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
পরিস্থিতি শান্ত করতে কোতয়ালী থানায় মেট্রোপলিটন পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে আহত পুলিশ সদস্যদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার শর্তে সাধারন ডায়েরি মূলে আটক ৩ ছাত্রকে ছেড়ে দেয় পুলিশ।
আহত দুই পুলিশ সদস্য হলেন- পুলিশ সার্জেন্ট মনিরুল ইসলাম ও কনস্টেবল মোস্তফা জামাল। আটক ৩ শিক্ষার্থী হলেন- একাউন্টিং বিভাগের মো. শরীফুল, ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের আলবির হোসেন এবং মার্কেটিং বিভাগের মো. সোহাগ।
মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক পরিদর্শক মো. আবদুর রহিম জানান, নিয়মিত দায়িত্বের অংশ হিসেবে সার্জেন্ট মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে ট্রাফিক পুলিশের একটি দল মঙ্গলবার শের-ই বাংলা মেডিকেলের সামনে বান্দ রোডে যানবাহনের কাগজপত্র পরীক্ষা করছিল। সন্ধ্যা ৭টার দিকে কাগজপত্র বিহীন একটি মোটরসাইকেল আটক করে তারা। এসময় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র পরিচয়ধারী ফারদীন ট্রাফিক পুলিশকে দেখে নেয়ার হুমকি দেয়। রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ থেকে ১৫ জনের সংঘবদ্ধ একদল ছাত্র মেডিকেলের সামনে দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশ সদস্যদের উপর আকস্মিক হামলা চালায়। হামলায় ট্রাফিক সার্জেন্ট মনিরুল ও কনস্টেবল মোস্তফা আহত হয়। মোস্তফা জামালকে শের-ই বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করা হয়।
এদিকে, হামলার সময় পুলিশ সদস্যরা ৩ ছাত্রকে আটক করে। এ খবর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে কর্নকাঠী এলাকায় বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক প্রায় এক ঘণ্টা অবরোধ করে রাখে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শিক্ষার্থীদের শান্ত করে রাত ১০টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করিয়ে ছাত্রদের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় পুলিশ কমিশনারসহ শীর্ষ পুলিশ কর্মকতাদের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন।
রাত পৌনে ১টার দিকে সভা শেষে পুলিশ কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ছাত্ররা রাইজিং। তাদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত পুলিশ সদস্যের কাছে ক্ষমা চাওয়ার শর্তে সাধারন ডায়েরি করে আটক ৩ ছাত্রকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগি অধ্যাপক ড. মো. খোরশেদ আলম বলেন, মোটরসাইকেল আটকের ঘটনা নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বাদানুবাদের ঘটনা মাত্রাতিরিক্ত হয়েছে। এর জের ধরে শিক্ষার্থীরা মহাসড়ক অবরোধ করে। পুরো বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত। ছাত্ররা ভবিষ্যতে আর মহাসড়ক অবরোধ করবেনা বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
আটকের পর ছেড়ে দেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ ছাত্রদের বিরুদ্ধে এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপর একাধিক হামলার অভিযোগ রয়েছে।