বছরের তৃতীয় মাসেও সম্পূর্ণ পাঠ্যবই পায়নি দিনাজপুরের ৩৮৫০ শিক্ষার্থী

দিনাজপুর প্রতিনিধি
সারাদেশে নতুন বছরের প্রথমদিনেই প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে বই বিতরণ করা হয়। তবে ব্যতিক্রম দিনাজপুরের খানসামা উপজেলা। বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীরা নতুন পাঠ্যবই হাতে পেলেও নবম শ্রেণির ৩৮৫০ শিক্ষার্থী পাঠ্যবই থেকে এখনও বঞ্চিত। এতে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের নতুন কারিকুলামে পাঠদান। উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থীর অভিভাবকরাও।

খানসামা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস জানায়, ২০২৪ সালের জন্য খানসামা উপজেলার ৬৬টি নিম্ন মাধ্যমিক, মাধ্যমিক ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ৯ম শ্রেণির ৩৮৫০ শিক্ষার্থীর জন্য পাঠ্যবইয়ের চাহিদা পাঠানো হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত গণিত বিষয়ে ৩০৫০টি, বিজ্ঞান (অনুশীলন) বিষয়ে ২৪৫০টি, শিল্প ও সংস্কৃতি ৩০০০টি, স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা ১৯০০টি, জীবন ও জীবিকা ২১২০টি বই পেয়েছে শিক্ষা বিভাগ। এছাড়াও ইসলাম শিক্ষা ২৪২৫টি বইয়ের চাহিদার বিপরীতে ১২৫৫টি বই পেয়েছে। অন্যদিকে বাংলা, ইংরেরি, বিজ্ঞান (অনুসন্ধানী পাঠ), ডিজিটাল প্রযুক্তি, ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান, হিন্দু ধর্ম শিক্ষা ও খ্রিস্টধর্ম শিক্ষার কোন বই আসেনি বলে জানিয়েছেন উপজেলা শিক্ষা বিভাগ।

জানা যায়, পহেলা জানুয়ারি নতুন বই বঞ্চিত হলেও গত ফেব্রুয়ারি ও মার্চ মাসে সীমিত সংখ্যক বই পেয়েছে শিক্ষার্থীরা। এদিকে আগামী ২৫ মার্চ থেকে বিদ্যালয়ে রমজানের ছুটি শুরু হবে। ফলে চার মাসই বইহীন থাকতে হবে শিক্ষার্থীদের।
হোসেনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী আইরিন আক্তার ও সুশান্ত রায় বলেন, ১১টি বিষয়ের মধ্যে মাত্র ৬টি বিষয়ে বই পেয়েছি। বাংলা, ইংরেজিসহ ৫টি বিষয়ে বই না পাওয়ায় এসব বিষয়ের ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছি এখন।

নির্ধারিত সময়ে পাঠ্যবই না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে অভিবাবক মাহবুব ইসলাম বলেন, প্রায় ৩ মাস চলে যাচ্ছে, আবার এই বছর নতুন কারিকুলাম, তাই সঠিক সময়ে পাঠ্যবই না পাওয়ায় শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও পরীক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। কেননা নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা একবছর পরেই দশম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হবে এবং এসএসসি পরীক্ষা দিবে।

হোসেনপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুল ইসলাম বলেন, ৩ মাসেও শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবই না পাওয়ায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। নির্ধারিত সময়ে সিলেবাস সম্পন্ন করা কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে।

এর সত্যতা নিশ্চিত করে খানসামা উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মঞ্জুরুল হক বলেন, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান সঠিক সময়ে বই সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষার্থীর কাছে বই পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়নি। তবে বৃহস্পতিবার এনসিটিবি-র পক্ষ থেকে জানিয়েছেন দ্রুত বইগুলো পাওয়া যাবে। আশাকরি দ্রুত সময়ের মধ্যে পাঠ্যবই হাতে পাওয়া যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights