বিচ্ছেদের পর অন্তরঙ্গ ছবি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল পুলিশ কনস্টেবলের, অতঃপর…
বরগুনা প্রতিনিধি
বিচ্ছেদের পর সাবেক স্বামী বরগুনার তালতলী থানায় কর্মরত পুলিশ কনস্টেবল আসাদুজ্জামানকে ফের বিয়ের দাবিতে থানায় অনশন করেছেন সাবেক স্ত্রী। বিচ্ছেদের পর অন্তরঙ্গ ছবি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করায় ফের বিয়ের দাবি তোলেন ওই তরুণী। পরে থানা কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে ঐ পুলিশ সদস্য বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিলে সন্ধ্যায় অনশন ভাঙেন তিনি।
এর আগে গতকাল সোমবার (৩০ জানুয়ারি) রাত আটটা থেকে তালতলী থানায় ঐ তরুণী অনশনে বসেন।
জানা যায়, গত ২০১৯ সালে বরগুনার বেতাগী থানায় আসাদুজ্জামান কর্মরত থাকাকালীন সময় ফেসবুকে এক তরুণীর সাথে পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক চলতে থাকে। এক বছর আগে বেতাগী কাজী অফিসে ৩ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন তারা। বেতাগীতে একটি বাসা ভাড়া নিয়ে তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বসবাস শুরু করেন। পরে গত ২০২২ সালের মাঝামাঝির দিকে পারিবারিক কলহের জেরে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এর কিছু দিন পরে আসাদুজ্জামান ফের ঐ তরুণীর সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। যোগাযোগে ব্যর্থ হয়ে বিয়ের সময় স্বামী-স্ত্রীর অন্তরঙ্গ ছবি দিয়ে ব্ল্যাকমেইল শুরু করেন। ওই তরুণী উপায় না পেয়ে ফের তার প্রেমের প্রস্তাবে সাড়া দেয়। পরে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময় শারীরিক সম্পর্ক করেন।
ওই তরুণী জানান, চলতি বছরের জানুয়ারির ২৩ তারিখ বিয়ের কথা বলে কুয়াকাটা একটি হোটেলে তারা রাত্রিযাপন করেন। পরের দিন সকালে বিয়ে না করে হোটেল থেকে চলে আসেন। এরপর থেকে আসাদুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না ঐ তরুণী। পরে বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারেন আসাদুজ্জামান তালতলী থানায় কর্মরত আছেন। গতকাল (৩০ জানুয়ারি) সোমবার দুপুরে বেতাগী থেকে আসাদুজ্জামানের সাথে যোগাযোগের জন্য তালতলী থানায় আসেন ঐ তরুণী। তালতলীতে এসে আসাদুজ্জামানকে ফোন দিলে তিনি সরাসরি দেখা করেন। পরবর্তীতে বিয়ের কথা বলে সারাদিন তালতলীর বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে বাজারের একটি খাবার হোটেল তরুণীকে একা রেখে পালিয়ে যায়। পরে তরুণী বিয়ের দাবিতে থানায় যায়। গতকাল রাত থেকে তরুণী বিয়ের দাবিতে থানায় অনশন শুরু করে।
এ বিষয়ে তরুণী বলেন, আমাকে প্রথম বিয়ের পরে ডিভোর্স দেয় আসাদুজ্জামান। পরবর্তীতে ব্ল্যাকমেইল করে ফের সম্পর্ক তৈরি করেন এবং বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার শারীরিক মেলামেশা করেন। এখন আমি বিয়ের দাবিতে তালতলী থানায় আছি। বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত আমি থানা থেকে বের হবো না। আসাদুজ্জামানের সাথে আমার যদি বিয়ে না হয় তাহলে আমি থানার সামনে আত্মহত্যা করবো।
এ বিষয়ে পুলিশ কনস্টেবল আসাদুজ্জামান বলেন, আমি বিয়ে করবো ঐ তরুণীকে। আমাদের ভেতরে এখন আর কোনো ঝামেলা নেই। আমি আজকে ছুটি নিয়ে বাড়িতে গিয়ে বিয়ে করবো।
তালতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী শাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, থানার পুলিশ কনস্টেবল আসাদুজ্জামানকে বিয়ের দাবিতে এক তরুণী থানায় এসেছে। বিষয়টি আমরা দেখছি।