বিরামপুরে রখুনিকান্ত জমিদারবাড়ি
রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর
দিনাজপুরের বিরামপুরে ভগ্নদশায় কালের সাক্ষী হয়ে আছে অষ্টাদশ শতকের ঐতিহ্যবাহী রখুনিকান্ত জমিদারবাড়ি। ওই বাড়ির অনেক জায়গা এখন বেদখলে। বাড়িসহ শত শত বিঘা জমি, বনজ-ফলদ ও ঔষধি বাগান বিলীন হতে চলেছে। মেরামত ও সংস্কার না করায় সবই রয়েছে ধ্বংসের পথে।
জানা গেছে, ব্রিটিশ শাসকরা অষ্টাদশ শতকে দিনাজপুরের ফুলবাড়ির জমিদারের খাজনা আদায়কারী হিসেবে রাজকুমার সরকারকে বিরামপুরের রতনপুর কাচারীতে প্রেরণ করেছিল। এখান থেকে তিনি বিরামপুর, নবাবগঞ্জ, হাকিমপুর ও ফুলবাড়ী এলাকার প্রজাদের নিকট থেকে খাজনা আদায় করতেন। তার কর্মদক্ষতায় সন্তুষ্ট হয়ে জমিদার তার বোনের সঙ্গে রাজকুমারের বিয়ে দেন এবং সাড়ে ৬০০ বিঘা জমিসহ রতনপুর কাচারী উপহার দেন। পরে রাজকুমারের মৃত্যু ঘটলে ঊনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে অঢেল সম্পদ, বাগান ও পুকুরসহ প্রায় ১২০০ বিঘা জমিদারি লাভ করেন তার ছেলে রখুনিকান্ত রাজকুমার সরকার। ১৯৭১ সালে এদেশে স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু হলে রখুনিকান্ত সস্ত্রীক দেশ ত্যাগ করেন। তারপর পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে গোটা সম্পদ। রক্ষণাবেক্ষণ ও তদারকির অভাবে এখন অনেক সম্পত্তি বিলীন ও বেদখল হয়েছে। লতায় পাতায় ছেঁয়ে যাওয়া জীর্ণ জঙ্গলময় ভূতুড়ে পরিত্যক্ত এ জমিদারবাড়িটি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার্থে সংস্কারের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করে বাস্তবায়ন করা দরকার বলে মনে করেন এলাকাবাসী। এটিকে আকর্ষণীয় করে ঐতিহ্য ধরে রাখলে ইতিহাসের পাশাপাশি পর্যটকদের জ্ঞান পিপাসা মিটাতে পারতো বলেও মনে করেন স্থানীয়রা।