মাদুরোর শপথ গ্রহণের প্রাক্কালে বিক্ষোভ ও সমাবেশের প্রস্তুতি বিরোধীদের

অনলাইন ডেস্ক
শুক্রবার শপথ নেবেন ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো। তবে তার শপথ গ্রহণের প্রাক্কালে বৃহস্পতিবার সরকারপন্থী ও বিরোধীরা সমাবেশ ও বিক্ষোভের প্রস্তুতি নিয়েছে।

কেননা বিরোধীরা তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে মাদুরো নির্বাচিত হওয়ার ফলাফলকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অধিকাংশ রাষ্ট্র তৃতীয় মেয়াদে তার এই শপথ গ্রহণকে অবৈধ ঘোষণা করেছে।

বিরোধী দলীয় নির্বাসিত নেতা এডমুন্ডো গঞ্জালেজ উরুতিয়া নিজেকে প্রেসিডেন্ট দাবি করে দায়িত্ব গ্রহণ করতে দেশে ফিরে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি জোর দাবি করেন- গত জুলাইয়ের নির্বাচনে তিনি জিতেছেন।

শুক্রবারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আগে তার যে বিপুল সংখ্যক সমর্থক রয়েছে, তাদের বিক্ষোভে যোগ দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।

এদিকে মাদুরোর ক্ষমতাসীন ‘চাভিস্তা’ আন্দোলনের সমর্থকরাও রাজপথে নামার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং কারাকাসে হাজার হাজার ভারী অস্ত্রে সজ্জিত সশস্ত্র পুলিশ ও সৈন্যকে আগাম মোতায়েন করা হয়েছে।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, পাঁচ মাস আগে মাদুরোর নির্বাচনী জয়ের দাবির প্রতিবাদে নৃশংস দমন অভিযানে ২৮ জন নিহত এবং প্রায় ২শ’ জন আহত ও ২,৪০০ জনেরও বেশি বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

ভেনিজুয়েলার নাগরিক মেলিন রদ্রিগেজ বলেন, “কী ঘটবে তা আগে থেকে বলা যাচ্ছে না। আমি জানি না যে- যা ঘটবে তা ভাল, না কি খারাপ হবে।”

ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে গঞ্জালেজ উরুতিয়া সফরে সোমবার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছ থেকে শক্তিশালী সমর্থন পেয়েছেন।

এই সফরের পরবর্তী ধাপে তিনি মাদুরোকে সরে যাওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করার প্রচারণার অংশ হিসেবে বুধবার পানামায় যাবেন। সেখানে তিনি সাবেক লাতিন আমেরিকান দেশটির প্রেসিডেন্ট ও লাতিন দেশগুলোর বেশ কয়েকজন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন।

ভেনিজুয়েলা সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ মারিয়ানো দে আলবা বলেছেন, “এডমুন্ডো গঞ্জালেজ উরুতিয়ার কৌশল হল বিরোধীদেরকে উদ্দীপনা দেওয়া ও আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানোর চেষ্টায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করা।”

দেশে ফিরে এলে কারাকাসের কর্তৃপক্ষ গঞ্জালেজ উরুতিয়াকে গ্রেফতার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তিনি গত সেপ্টেম্বর থেকে স্পেনে নির্বাসিত জীবনযাপন করছেন।

বিরোধীদলীয় নেতা মারিয়া কোরিনা মাচাদো বলেছেন, তিনি বৃহস্পতিবার বিক্ষোভকারীদের সাথে যোগ দিতে আত্মগোপন থেকে বেরিয়ে আসবেন।

মাচাদোকে গঞ্জালেজ উরুতিয়া শেষ মুহুর্তে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে তার স্থলাভিষিক্ত করেছিলেন।

মাচাদো সোমবার বলেন, “আমি এই ঐতিহাসিক দিনটিকে কোনও কিছুর বিনিময়ে মিস করব না।”

বিরোধী দল দাবি করছে, ভোট কেন্দ্র নির্বাচনের ফলাফলের তাদের নিজস্ব হিসাব দেখায় যে, গঞ্জালেজ উরুতিয়া জয়ী হয়েছেন।

তবে দেশটির নির্বাচনী পরিষদ শাসক দলের প্রতি অনুগত। তারা ভোট গণনা ছাড়াই মাদুরোকে জয়ী ঘোষণা করেছে।

তার বিজয়ের দাবি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ল্যাটিন আমেরিকার অনেকগুলো রাষ্ট্রসহ অন্যান্য অসংখ্য দেশ স্বীকৃতি দেয়নি।

আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপ থিঙ্ক ট্যাঙ্কের ফিল গানসন বলেন, “ক্ষমতায় থাকার জন্য এই সরকারকে সশস্ত্র বাহিনী ও পুলিশের ওপর বেশি বেশি নির্ভর করতে হয়েছে। ২৮ জুলাই থেকে সেই নির্ভরতা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে এবং ১০ জানুয়ারি থেকে এটি আরও গভীর হবে।” সূত্র: এএফপি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights