যশোরে নীরব দুর্ভিক্ষ মধ‍্যবিত্তে নিভৃতে কাঁদে

মীর ফারুক হোসেন যশোর জেলা প্রতিনিধিঃ

মুসলমানদের বড় দুটি ধর্মীয় উৎসবের একটি হলো পবিত্র ইদুল আজহা।মুসলিমদের ইদ মানে আনন্দ।কিন্ত সেই আনন্দ অনেকের জীবনে এখন কষ্টের কারন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

যশোরে সম্প্রতি অতিবৃষ্টিতে অধিকাংশ কৃষক তাদের মাঠের পাকা ফসল ঘরে তুলতে পারে নাই এবং প্রতিদিন নিত‍্যপ্রয়োনীয় দ্রব‍্যাদি লাগামহীন মূল‍্য বৃদ্ধি ও নানাবিধ কারনে এবারের ইদুল আজহা এই অঞ্চলের মধ‍্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ নীরব দুর্ভিক্ষে নিভৃতে কাঁদছে,নিভৃতে মধ‍্যবিত্ত এই কান্না দেখা ও শোনার কেউ নাই।

যশোর অঞ্চলের মধ‍্যবিত্ত শ্রেণীর অধিকাংশ মানুষ কৃষির উপড় নির্ভরশীল,তাদের আয়ের একমাত্র উৎস কৃষিতে উৎপাদিত ফসল সমূহ। সম্প্রতি এই অঞ্চলে অতিবৃষ্টিতে ফসলের ব‍্যাপক ক্ষতিসাধন হয়।কৃষকরা তাদের সোনালী ফসল ইরি ধান ঘরে তুলতে পারেননি।
ফলে মধ‍্যবিত্ত কৃষক শ্রেণীর মানুষ চরম অর্থ সংকট এর মধ‍্য পড়েছে এবং অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে দ্রব‍্যমূল‍্য দাম পাগলা ঘোড়ার ন‍্যায় লাগামহীন ঊর্ধ্বমুখী।
ফলে মধ‍্যবিত্তরা সংসার চালাতেই ধার দেনায় জর্জরিত হয়ে পড়ছে। সেখানে তারা ইদুল আজহায় উৎসবে ছেলে মেয়েদের জন‍্য নতুন পোশাক ও কুরবানী দিবে কিভাবে?

সরেজমিনে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মধ‍্যবিত্ত মানুষের সাথে কথা বললে এমন তথ‍্য উঠে এসেছে।মধ‍্যবিত্তরা যত বিপদ আপদে থাকুক না কেনো, সরকারী অনুদান বা মানুষের সাহায্য কোনটায় এদের কাছে আসে না।

যশোর ঝিকরগাছা ছুটিপুর গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন আমি ১৫ বিঘা জমিতে ধান চাষ করি।যাতে খরচ হয় ২ লক্ষ ৩০ হাজার টাকা,কিন্তু বৃষ্টিতে ফসল সব নষ্ট হয়ে গেছে।জমিতে ফসল উৎপাদনে যে খরচ হয়েছিলো সেই টাকাও তুলতে পারি নাই।অন‍্য দিকে পাওনাদারা তাদের টাকার জন‍্য চাপ দিচ্ছে।সংসার খরচ ও পাওনাদারদের চাপে আমার জীবন এখন অতিষ্ঠ।

শার্শা বালুন্ডা গ্রামের গোলাম রসুল বলেন, বৃষ্টিতে সব ফসল নষ্ট হয়ে গেছে,এখন হাতে সংসার চালানো টাকা নাই।বাকি টাকার জন‍্য আড়ৎদাররা চাপ দিচ্ছে।প্রতিদিন ধারদেনায় জর্জরিত হয়ে পড়ছি।আমাদের সাহায্য ও পাশে থাকার কেউ না।

সাড়াতলা গ্রামের আওয়াল মিয়া ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন মধ‍্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ সব সময় অবহেলা ও বঞ্চনা শিকার। মধ‍্যবিত্তরা যত বিপদ আপদে থাকুক তাদের সাহায্য করা বা তাদের দেখার কেউ নাই।এমন কি সরকারী কোন অনুদান বা সাহায্য মধ‍্যবিত্তরা পায় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights