যে কাজ করতে নিষেধ করেছে কোরআন

মুফতি মাহমুদুল হক জালীস
কোরআন মানুষকে ভালো কাজের আদেশ করেছে। অন্যায় কাজ থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। সফলতার পথ দেখিয়েছে, ব্যর্থতার পথ বলে দিয়েছে। মানুষ কীভাবে চলবে, কীভাবে জীবনযাপন করবে তারও সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিয়ে রেখেছে। জীবনে চলতে গিয়ে নিজের শরীরে আঘাত করা বা দুঃখ বা কষ্ট পেলে নিজের বুকে-মুখে আঘাত করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। অন্যের সম্পদ জবরদখল করতে নিষেধ করেছে। বৈধতার সঙ্গে ব্যবসা করার আদেশ করেছে। খুনখারাবি থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা একে অন্যের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস কোরো না। কেবল তোমাদের পরস্পরের সম্মতিক্রমে যে ব্যবসা করা হয় তা বৈধ। আর তোমরা নিজেদের কাউকে হত্যা কোরো না। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়ালু।’ (সুরা নিসা, আয়াত ২৯) মদপান ও জুয়া খেলা ইসলামের সবচেয়ে বড় পাপগুলোর মধ্যে অন্যতম। এগুলো সম্পর্কে মানুষকে কোরআন সতর্ক করেছে। মদ খাওয়াকে নিষেধ করেছে। জুয়া থেকে বিরত থাকার আদেশ করেছে। এ প্রসঙ্গে কোরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘হে ইমানদারগণ! মদ, জুয়া, মূর্তিপূজার বেদি ও ভাগ্য নির্ণায়ক শর- এসবই ঘৃণ্য শয়তানি কার্যকলাপ। এগুলো থেকে দূরে থাকো, আশা করা যায় তোমরা সফলতা লাভ করবে।’ (সুরা মায়েদা, আয়াত ৯০) সুদ ইসলামে নিষিদ্ধ। কোরআন সুদি লেনদেন থেকে বিরত থাকতে আদেশ করেছে। কারণ সুদের মাধ্যমে মূলত সমাজে দরিদ্র বাড়ে। মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ঋণের বোঝা বাড়তে থাকে। এ প্রসঙ্গে কোরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘কিন্তু যারা সুদ খায় তাদের অবস্থা হয় ঠিক সেই লোকটির মতো যাকে শয়তান স্পর্শ করে পাগল করে দিয়েছে। তাদের এ অবস্থায় উপনীত হওয়ার কারণ হচ্ছে, তারা বলে ব্যবসা তো সুদেরই মতো। অথচ আল্লাহ ব্যবসা হালাল করে দিয়েছেন এবং সুদকে করেছেন হারাম। কাজেই যে ব্যক্তির কাছে তার রবের পক্ষ থেকে এ নসিহত পৌঁছে যায় এবং ভবিষ্যতে সুদখোরি থেকে সে বিরত হয়, সে ক্ষেত্রে যা কিছু সে খেয়েছে তা তো খেয়ে ফেলেছেই এবং এ ব্যাপারটি আল্লাহর কাছে সোপর্দ হয়ে গেছে। আর এ নির্দেশের পরও যে ব্যক্তি আবার এ কাজ করে, সে জাহান্নামের অধিবাসী। সেখানে সে থাকবে চিরকাল।’ (সুরা বাকারা, আয়াত ২৭৫) যে-কোনো পশু জবাই করার সময় মানুষকে কোরআন আল্লাহর নাম উচ্চারণের নির্দেশ দিয়েছে। আর যদি আল্লাহর নাম না নিয়ে পশু জবাই করা হয়; সেটাকে হারাম বলেছে। এমন পশু খেতে নিষেধ করেছে। এ প্রসঙ্গে কোরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘যেসব জন্তুর ওপর আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়নি, সেগুলো থেকে ভক্ষণ কোরো না; এ ভক্ষণ করা গুনাহ। নিশ্চয় শয়তানরা তাদের বন্ধুদের প্রত্যাদেশ করে; যেন তারা তোমাদের সঙ্গে তর্ক করে। যদি তোমরা তাদের আনুগত্য কর, তোমরাও মুশরিক হয়ে যাবে।’ (সুরা আনয়াম, আয়াত ১২১)

লেখক : মুহাদ্দিস, খাদিমুল ইসলাম মাদরাসা, কামরাঙ্গীর চর, ঢাকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights