রংপুরকে এগিয়ে নিতে সমন্বিত উদ্যোগ দরকার
নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর
রংপুরে এক কর্মশালায় বক্তারা বলেছেন, ‘উন্নয়ন বঞ্চিত রংপুরকে এগিয়ে নিতে সঠিক রাজনৈতিক নেতৃত্ব, কৃষিতে সমতা, অঞ্চল ভিত্তিক বাজেট বরাদ্দ, কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলা, তরুণ উদ্যোক্তা তৈরিসহ সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া দরকার।’
‘রংপুর বিভাগ বৈষম্য নিরসন আন্দোলন কর্মশালায়’ বক্তারা এ আহ্বান জানান।বুদ্ধিবৃত্তিক ও গঠনমূলক কর্মসূচির মাধ্যমে দাবি আদায়ের ঘোষণাও দেওয়া হয়। প্রকাশ করা হয় ‘রংপুর’ ঘোষণাপত্র।
আজ মঙ্গলবার নগরীর আরকে রোডে এনজিও ব্যুরো এর হলরুমে ‘উন্নয়ন বৈষম্যের শিকার রংপুর বিভাগের বহুমাত্রিক দারিদ্র, শিল্পায়নে বন্ধ্যাত্ব এবং বাজেট বৈষম্য নিরসনে করণীয় শীর্ষক কর্মশালায় অংশ নিতে ছুটে আসেন বিভাগের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। অধিকার আদায়ে নিজস্ব মতামত প্রকাশ করেন তারা।
অংশগ্রহণকারীরা বলেন, উত্তরকে এগিয়ে নিতে বিগত সময়ের সরকারের দেয়া আশ্বাস বানীতে কেটেছে বহু বছর। উন্নয়ন বৈষম্যের জালে আটকা পড়েছে পুরো অঞ্চল। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, কৃষি ও ভারী শিল্পের প্রসার ঘটেনি। কৃষি নির্ভর রংপুরের মানুষ যতটুকু এগিয়েছেন তাদের নিজেদের চেষ্টায়। এতে স্বেরাচারী আওয়ামী লীগ সরকারে কোন কৃতিত্ব নেই। এবার সময় এসেছে বৈষম্য ভেঙে এগিয়ে যাওয়ার। অবকাঠামোগত উন্নয়ন দিয়ে গোটা দেশ বা একটি অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন বিচার করা অনেকটাই বোকামি। জনকল্যাণমূলক উন্নয়নই হচ্ছে মূল উন্নয়ন। রংপুর বিভাগে কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে সেটি আওয়ামী লীগের রাজনৈতি এজেন্ডা বাস্তবায়নে। উন্নয়নের নামে পকেট ভারী করেছেন নেতারা। গরীবের রক্ত চুষে ফ্যাসিস্ট সরকারের এমপি, চেয়ারম্যানরা লাভবান হয়েছেন। এবার সময় এসেছে বৈষম্য ভাঙার। এক্ষেত্রে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তারা।
কর্মশালায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. শওকাত আলী বলেন, সবার সমন্বিত উদ্যোগে দাবি আদায় সহজ হবে। যেমন বৈষম্য ভেঙে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়কে নবরুপে সাজানোর চেষ্টা চলছে। তেমনি করে আসছে বাজেটকে সামনে রেখে যৌক্তিক দাবি আদায়ে এই ধারা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।
বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, ছোট ছোট পদক্ষেপগুলোকে ধারাবাহিতকায় রেখে সবার মধ্যে ঐক্য তৈরি করতে হবে। পিছিয়ে পড়া এই অঞ্চলের মানুষের অধিকার আদায়ে সমাজপতিদের নিয়ে শক্ত বন্ধন তৈরি করে এগিয়ে যেতে হবে। তবেই ভাঙবে বৈষম্য।
কর্মশালায় সভাপতিত্ব ও মূল কক্তব্য উপস্থাপন করে সমাজ-রাজনীতি বিশ্লেষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাধ্যক্ষ ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘রংপুর’ ঘোষণাপত্রটি ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এটি হবে এগিয়ে যাওয়ার আগামীর পথচলা। থাকবে বুদ্ধিবৃত্তিক কর্মসূচির মাধ্যমে দাবি আদায়ের শান্তিপূর্ণ প্রচেষ্টা। কর্মশালায়, রংপুর বিভাগীয় বিএনপির পল্লী উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ, রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামু, জেলা সুজন সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আকবর হোসেন, নীলফামারী জেলা বিএনপির সভাপতি আ.খ.ম আলমগীর হোসেনসহ বিভাগের দিনাজপুর, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, লালমনিরহাট জেলার রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক, শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ অংশ নেন।