শিল্প খাতে বিনিয়োগ সম্ভাবনা বাড়ছে

সামছুজ্জামান শাহীন, খুলনা

পদ্মা সেতু চালুর পর খুলনা অঞ্চলে বিনিয়োগ ও ব্যবসায়িক তৎপরতা বেড়েছে। নতুন শিল্পপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের ক্ষেত্রে খুলনা-মোংলা সড়কের দুই পাশে জমি কেনা ও অবকাঠামো নির্মাণ হচ্ছে। এরই মধ্যে সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে অ্যাগ্রো প্রসেসিং, জীবন্ত ও প্রক্রিয়াজাত কাঁকড়া, ভেষজ ওষুধশিল্প, রাইস ব্রান অয়েল শিল্প, অটোমোবাইল সার্ভিসিং, সিরামিক ও হেলথ অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালস চিহ্নিত করা হয়েছে। গত সাত বছরে এখানে নিবন্ধিত শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে ২০৭টি। এতে বিনিয়োগের পরিমাণ ২ লাখ ১ হাজার ১৬৮ মিলিয়ন টাকা। কর্মসংস্থান হয়েছে ৩৫ হাজার ৩৫৯ জনের। এর বাইরে স্থানীয় বিনিয়োগে শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে ১ হাজারের বেশি।

এদিকে বিনিয়োগের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে উদ্যোক্তাদের ভোগান্তি কমাতে ৩৮টি সংস্থার বিভিন্ন লাইসেন্স বা অনুমোদনসহ ১১৩টি বিনিয়োগ সেবা প্রদানে কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। ভিন্ন ভিন্ন প্রতিষ্ঠানে না গিয়ে বিশ্বের যে কোনো প্রান্ত থেকে বিনিয়োগকারীরা বিডা ওএসএস অ্যাপসের মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিনিয়োগ সুবিধা পেতে পারেন। গতকাল খুলনায় ‘বিনিয়োগ উন্নয়ন ও বিডা ওএসএস কার্যক্রম অবহিতকরণ’ সেমিনারে এসব তথ্য জানানো হয়। বিডা খুলনার বিভাগীয় পরিচালক প্রণব কুমার রায় জানান, প্রতিষ্ঠিত শিল্প খাতের মধ্যে খুলনায় রাইস মিলিং ৪৮, পাটশিল্প ৪৪, ফিশ প্রসেসিং ৩৮, পোলট্র্রি সেক্টর ২৫ ও অটোমোবাইল সার্ভিসিং ১৯টি রয়েছে। শিল্প স্থাপনের ক্ষেত্রে খুলনা, যশোর, কুষ্টিয়া, বাগেরহাট, ঝিনাইদহ জেলা এগিয়ে রয়েছে। সব থেকে পিছিয়ে রয়েছে চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর। এদিকে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া বলেন, বিনিয়োগের অপার সম্ভাবনা কাজে লাগাতে উদ্যোক্তাদের ভোগান্তি কমাতে ১১৩টি বিনিয়োগ সেবা চালু করেছে বিডা ওএসএস। এসব সুবিধা পেতে সশরীরে কোনো অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। তিনি বলেন, খুলনা অঞ্চলে শিল্প প্রতিষ্ঠায় বড় প্রতিবন্ধকতা গ্যাস। এ বিষয়ে সরকার কাজ করছে। তিনি কৃষিভিত্তিক শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানান।

খুলনা চেম্বার অব কমার্সের সহসভাপতি শরীফ আতিয়ার রহমান বলেন, খুলনা-মোংলা সড়কের দুই পাশে অসংখ্য ব্যবসায়ী শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য জমি কিনে রেখেছেন। কিন্তু বিমানবন্দর ও গ্যাস না থাকায় অবকাঠামোগত কাজ শুরু করেননি। এ ক্ষেত্রে শিল্প খাতে বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে পারলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ বাড়বে। বিডার নির্বাহী সদস্য ড. খন্দকার আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘কোন অঞ্চলে কোন ধরনের শিল্প স্থাপন ও সেখানে বিনিয়োগে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে, কীভাবে মোকাবিলা করা যায় তা চিহ্নিত করে বিনিয়োগ উন্নয়নে সমন্বিত কাজ করতে চাই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights