‌‌‘সরকার মানি লন্ডারিং বন্ধে পদক্ষেপ নিতে পারছে না’

বিরোধী দল জাতীয় পার্টির এমপি ফখরুল ইমাম বলেছেন, দেশের অর্থনীতি ক্রান্তিলগ্ন পার করছে। বাংলাদেশের টাকা পাচার হয়ে যাচ্ছে। গত জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক ৫০ হাজার কোটি টাকা ছাপিয়েছে। এই টাকা সিস্টেম থেকে ব্যাংকের মাধ্যমে বেরিয়ে গেছে। সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহসিকতা দেখাতে পারলেও মানি লন্ডারিং বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে পারছে না। এসময় তিনি মানি লন্ডারিং বন্ধে সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান।

স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী সভাপতিত্বে সংসদের ২১তম অধিবেশনের আজকের বৈঠকে পয়েন্ট অব অর্ডারে ফ্লোর নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ফখরুল ইমাম পরিসংখ্যান তুলে ধরে আরো বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্বেও ডিসেম্বরের দুই সপ্তাহে চট্টগ্রামের তিনটি কোম্পানিকে তিন হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণ ছাড় দেয়া হয়েছে। ৫টি ইসলামিক ব্যাংককে ৮ দশমিক ৭ শতাংশ সুদে ১৪ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। অথচ ইসলামিক ব্যাংক সুদে ঋণ নেয় না। ঋণ দেওয়ার কথা না। তারা ইসলামি ব্যাংক, তাদের নীতি আদর্শে সুদ নামক কোন বস্তু নেই। তাহলে এটা কীভাবে হলো।

ফখরুল ইমাম আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে দেখেছি, বিশেষ বিশেষ সময় তার সাহসিকতা দেখেছি। দেখেছি আমাদের অভ্যন্তরীন বিষয় নিয়ে যেসব দেশ হস্তক্ষেপ করেছে তার বিরুদ্ধে উনি কথা বলেছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রী কথা বলেছেন। এটা আমাদের ভালো লাগে। পাশাপাশি যখন দেখি এরকম একটি শক্তিশালী সরকারের প্রধান মানি লন্ডারিংয়ের ব্যাপারে কিছুই করতে পারেন না, তখন নিজেকে অসহায় মনে হয়। বিভিন্ন সময় প্রকাশিত হিসাবে বলে এই পর্যন্ত কয়েক লক্ষ হাজার কোটি টাকা মানি লন্ডারিং হয়েছে। বাংলাদেশের দুই বছরের বাজেটের সমপরিমান টাকা মানি লন্ডারিং হয়েছে। কিন্তু সরকার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাহসিকতা দেখাতে পারলেও মানি লন্ডারিং বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারছে না। কাজেই আশা করবো সরকার এ ব্যাপারে কঠিন হবে। সরকারের সর্বোচ্চ নেতৃত্বে যিনি আছেন তার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
জাতীয় পার্টির আরেক সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, আর্থিক খাতের অনিয়মে কোনো দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি হয় না। ১৫৮ কোটি টাকা নিয়ে দেশ ছেড়ে চলে যায়। আর সামান্য ঋণের জন্য কৃষকদের কোমরে দড়ি দিয়ে বেঁধে জেলখানায় নেওয়া হয়। টাকা পরিশোধ করার পরও তার মুক্তি পেতে সময় লেগে যায়। অথচ এই কৃষক উৎপাদন করে, খাদ্য যোগায়। এটা সরকারকে ভাবতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights