৩ মাস পরে বেরোবিতে ক্লাস শুরু, শিক্ষার্থীরা স্মরণ করলেন আবু সাঈদকে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

তিন মাস বন্ধ থাকার পর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষাসহ সকল একাডেমিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়েছে। রবিবার ক্লাস পরীক্ষায় ফিরেছে শিক্ষার্থীরা। তবে এদিন সবাই উপস্থিত থাকলেও থাকতে পারেননি আবু সাইদ। তার স্মৃতি কাঁদাচ্ছে ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের।

ক্লাস শুরু হলেও বেরোবি শিক্ষার্থীদের দীর্ঘশ্বাস কমেনি। তারা বিভিন্নভাবে আবু সাঈদকে স্মরণ করছেন। আবু সাঈদের রুম এখনো ফাঁকা। এটা মেনে নিতে পারছে না তার সহপাঠী ও বন্ধুরা। তার খালি চেয়ারটি দেখে শিক্ষার্থীদের চোখে পানি এসে যায। এর আগে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো খোলার পর শিক্ষার্থীরা হলে, মেসে ফিরতে শুরু করে।

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব আহমেদ বলেন, ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে একাডেমিক কার্যক্রম আরম্ভ হয়েছে। আমরা ইংরেজী বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস পরীক্ষায় ফিরছি। কিন্তু সবচেয়ে বেদনার বিষয় হচ্ছে আমাদের ভাই শহীদ আবু সাঈদ উনি আর কখনোই ক্লাসে ফিরবে না। তাকে ছাড়া বিভাগে এসে ক্লাস করাটা কতটা শূন্যতা অনুভব করি তা ভাষায় প্রকাশযোগ্য নয়। দুই হাত টান করে বুক চিতিয়ে দেয়া আবু সাঈদকে কাছ থেকে যেভাবে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে সেই দৃশ্যপট মনে হলে কিছুটা নিস্তব্ধ হয়ে যাই, নির্বাক হয়ে যাই। এই সেই আবু সাঈদ যিনি সদাসর্বদা বিপদ আপদে পাশে থাকতেন, যে কোন বিষয়ে সাহায্য সহযোগিতায় এগিয়ে আসতেন। সেই আবু সাঈদ আজ আমাদের মাঝে নেই।

তিনি বলেন, আজ ক্লাসে যে সিটে তিনি আসন গ্রহণ করতেন সেই সিটও আবু সাঈদের শূন্যতা অনুভব করবে। সেই সিটও একা হয়ে যাবে। তার সেই বুক পেতে দাঁড়িয়ে থাকার দৃশ্য মনের কোণে ভেসে উঠে, হৃদয়টা হাহাকার করে উঠে। আর কখনোই আবু সাঈদকে আমরা ক্যাম্পসে দেখতে পারবো না, এই শূন্যতা আমাদের অন্তরে আজীবন থাকবে।
শিক্ষার্থী নুসরাত তাবাসসুম বলেন, আবু সাঈদ ভাই যাকে আমরা সবসময় বিপদে-আপদে পাশে পেতাম, কিন্তু আজ তাকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না। ১৬ জুলাই হঠাৎ করেই তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে। আবু সাঈদ ভাইয়ের বসার চেয়ারটাও এখনো ফাঁকা পড়ে আছে, যেন তার অপেক্ষায়। মেসে তার জিনিসপত্রগুলোও ঠিক আগের মতোই রয়ে গেছে, অথচ তিনি আর কখনো ফিরে আসবেন না। ক্যাম্পাস, ক্লাস, মেস—সব জায়গাতেই তার অনুপস্থিতি আমাদের মনে কষ্টের স্মৃতি হয়ে আছে। আর কখনোই আবু সাঈদ ভাইকে আমাদের ক্যাম্পাসে দেখতে পারব না, এ শূন্যতা আমাদের হৃদয়ে চিরকাল থেকে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights