বকশীগঞ্জে চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ আদায়, ফেরত চাওয়ায় উল্টো জিডি করলেন পৌর সচিব।

বকশীগঞ্জ(জামালপুর)প্রতিনিধি

চাকুরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নেন মোটা অংকের টাকা। পরে সেই টাকা করেন আত্মসাত। প্রতিশ্রুতি দেওয়া সেই চাকুরি না দেওয়ায় ফেরত চান টাকা। হাতিয়ে নেওয়া সেই টাকা ফেরত চাইলে উল্টো ভুক্তভোগীর নামে কাল্পনিক অভিযোগ এনে থানায় করেন সাধারণ ডায়েরী।
এমন অভিযোগ উঠেছে জামালপুরের বকশীগঞ্জ পৌরসভার সচিব (পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা) মো. নুরুল আমিনের বিরুদ্ধে। চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী যুবক আবদুর রাজ্জাক।
পৌর সচিবের এমন কান্ডে তোলপাড় শুরু হয়েছে পুরো উপজেলায়।
অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভুক্তভোগী সহ সচেতন মহল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাধুরপাড়া ইউনিয়নের কামালের বার্ত্তী গ্রামের মো. ইদ্রিছ আলীর ছেলে আবদুর রাজ্জাক ২০১৯ সালের জুন মাস থেকে বকশীগঞ্জ পৌরসভায় মাস্টার রোলে (অস্থায়ী চাকুরি) কাজ করে আসছেন। এঅবস্থায় পৌরসভার সচিব ( নির্বাহী কর্মকর্তা) মো. নুরুল আমিনের সঙ্গে তার সুসম্পর্ক গড়ে উঠে।
এক পর্যায়ে ওই কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাককে স্থায়ী চাকুরিতে নিয়োগের আশ্বাস প্রদান করেন। এরমধ্যে ২০২৩ সালের ১২ জানুয়ারিতে বকশীগঞ্জ পৌরসভায় একাধিক জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। একটি
জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি জারির পর স্যানিটারী ইন্সপেক্টর পদে চাকুরি পাইয়ে দিতে পৌর সচিব ( পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা) চাকুরি প্রত্যাশী আবদুর রাজ্জাকের কাছে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এক পর্যায়ে পৌর সচিবের প্রলোভনে পড়ে ১২ মে ২০২৩ ইং তারিখে আবদুর রাজ্জাক ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা নুরুল আমিনকে প্রদান করেন । মোটা অংকের অর্থ হাতিয়ে নিয়েও শেষ পর্যন্ত চাকুরি না দিলে পৌর সচিবের কাছে সেই অর্থ ফেরত চান আবদুর রাজ্জাক। আর এতেই বিপত্তি বাঁধে পৌর সচিব নুরুল আমিনের। তিনি টাকা ফেরত না দিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। নুরুল আমিন টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরী দায়ের করেন। গত ৪ সেপ্টেম্বর বকশীগঞ্জ থানায় প্রাণ নাশের হুমকির অভিযোগ তুলে আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে জিডি করেন নুরুল আমিন।
। এবিষয়ে ভুক্তভোগী আবদুর রাজ্জাক বলেন, আমাকে পৌরসভায় চাকুরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে পৌর সচিব ( পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা) মো. নুরুল আমিন আমার কাছে সাড়ে ৪ লাখ টাকা নেন। কিন্তু তিনি চাকুরিও দেননি এবং সেই টাকা ফেরতও দেয়নি। আমি সেই টাকা ফেরত চাইলে উল্টো আমার বিরুদ্ধেই জিডি করেছেন তিনি। মূলত টাকা দেবেন না বলেই তিনি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা জিডি করেন। ভুক্তভেগী আবদুর রাজ্জাক পৌর সচিবের এমন কান্ডে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে তার বিচার দাবি করেন।
এব্যাপারে বকশীগঞ্জ পৌর সচিব ( পৌর নির্বাহী অফিসার) মো. নুরুল আমিন সাংবাদিকদের জানান, তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগটি বানোয়াট। হুমকি দেওয়ার কারণে রাজ্জাকের বিরুদ্ধে জিডি করা হয়েছে। তবে তিনি টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) অহনা জিন্নাত জানান, এবিষয়ে ভুক্তভোগী আবদুর রাজ্জাক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

What do you like about this page?

0 / 400

Verified by MonsterInsights