আম বিপ্লবের আশা সাতক্ষীরায়
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
আমের রাজ্য সাতক্ষীরা অঞ্চলের প্রতিটি গাছ এখন মুকুলে ভরা। পত্রপল্লব ভেদ করে গাছে গাছে উঁকি দিচ্ছে আমের মুকুল। হলুদ-সবুজে মিশে বর্ণিল সাজে প্রকৃতি। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার জেলায় আমের বাম্পার ফলন হবে। চলতি মৌসুমে ৯০০-১০০০ কোটি টাকার আম উৎপাদনের আশা করছেন তারা। ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হবে ২০০ টন। একদিকে যেমন চাঙা হবে গ্রামীণ অর্থনীতি, অন্যদিকে বাড়বে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ির উপপরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম জানান, সাতক্ষীরায় ১ হাজার ৩০০ জন নিবন্ধিত আম চাষি আছেন। আম্রপালি, রুপালি, গোলাপখাস, নিলমবরি, তোতাবরি, কালাপাহাড়, কাঁচামিঠা, সিন্দুরগুটি, হিমসাগর, গোবিন্দভোগ, লেংড়া ও হিমসাগর, ফজলি, খিরসরাইসহ প্রায় ৩০-৪০ প্রজাতির আম হয় এখানে। এ বছর ৪ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে, যা গত বারের তুলনায় বেশি। এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬০ হাজার টন। ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন বাজারে যাবে ২০০ টন আম। চাষিরা এখন পর্যন্ত বেশ খুশি। সাতক্ষীরার দেবহাটা, কালীগঞ্জ, শ্যামনগর, তালা, পাটকেলঘাটা, কলারোয়া, আশাশুনি ও সদর উপজেলার যেদিকে চোখ যাবে থোকায় থোকায় আমের মুকুল। বাড়ির আঙিনা থেকে প্রতিটি বাগান ও রাস্তার ধারে লাগানো গাছে আমের মুকুল ম ম গন্ধ ছড়াচ্ছে। বাগান পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। সাতক্ষীরা কৃষিবাড়ির পরিচালক তরুণ উদ্যোক্তা রাহাত রাজা জানান, এ বছর তিনি আড়াই বিঘা জমির আম বাগান লিজ নিয়ে মুকুল আসার আগে থেকে পরিচর্যা করছেন। বাগানে গত বছরের তুলনায় বেশি মুকুল এসেছে। আশা করছেন ফলনও বেশি পাবেন। তিনি বলেন, গত বছর বৈরী আবহাওয়া এবং ব্যাকটেরিয়াজনিত কারণে মুকুল থেকে গুটি ঝরে গেছে। আশানুরূপ ফলন পাওয়া যায়নি। ফলে তেমন লাভের মুখ দেখতে পারেননি। এবার তার বাগানে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না এলে সব খরচ বাদ দিয়ে এক-দেড় লাখ টাকা লাভ করতে পারবেন। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনির হোসেন জানান, এ বছর আম্রপালি, হিমসাগর, গোবিন্দভোগ, লেংড়াসহ ২০০ টন আম রপ্তানির কথা ভাবছে কৃষি বিভাগ। রাসয়নিক ও বিষমুক্ত আম উৎপাদন এবং পোকার আক্রমণ রোধে কৃষি বিভাগের পক্ষ চাষিদের নানা পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।