রমজান মাসের ৩০টি বৈশিষ্ট্য
মুফতি মুহাম্মদ মর্তুজা
সিয়াম সাধনার মাধ্যমে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের মাস পবিত্র মাহে রমজান। এ মাসে মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য অফুরন্ত রহমত লাভের পথ উন্মুক্ত করে দেন। পাপমুক্ত হয়ে ঈমানদীপ্ত জীবনযাপনের প্রশিক্ষণ দেন। নিম্নে পবিত্র এই মাসের ৩০টি বিশেষ বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো—
১. রমজানের রোজা শুধু মুসলিমদের জন্য নির্দিষ্ট। (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৮৩)।
২. এটি আল্লাহর দেওয়া একটি বিধান। (প্রাগুক্ত)।
৩. রোজা তাকওয়া বৃদ্ধি করে। (প্রাগুক্ত)।
৪. এই মাসে পবিত্র কোরআন নাজিল হয়েছে। (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৮৫)।
৫. এতে রয়েছে এমন এক রজনী, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। (সুরা : কদর, আয়াত : ৩)।
৬. জান্নাতে রোজাদারদের জন্য রাইয়্যান নামে বিশেষ দরজা রয়েছে। (তিরমিজি, হাদিস : ৭৬৫)।
৭. এ মাসে জান্নাতের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৬৪২)।
৮. জাহান্নামের দরজাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়। (প্রাগুক্ত)।
৯. শয়তানদের অবাধ্য দলগুলোর শৃঙ্খলিত করা হয়। (প্রাগুক্ত)।
১০. আদম সন্তানের সব আমল তার জন্য, কিন্তু রোজা একমাত্র আল্লাহর জন্য নির্দিষ্ট। (বুখারি, হাদিস : ৫৯২৭)।
১১. রোজা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে গুনাহ থেকে রক্ষা করে। (বুখারি, হাদিস : ৭৪৯২)।
১২. এটি শরীরের জন্য উপকারী এবং সুস্থতা বাড়ায়। (তাবরান)।
১৩. রোজা আত্মগঠন ও নৈতিক উন্নতি ঘটায়। (সুরা : বাকারাহ, আয়াত : ১৮৩)।
১৪. এটি সেই মাস, যখন সবচেয়ে বেশি কোরআন তিলাওয়াত করা হয়। (বুখারি, হাদিস : ৬)।
১৫. এ মাসে সবচেয়ে বেশি নফল ইবাদত করা হয়।
১৬. এ মাসে ফেরেশতারা বেশি অবতরণ করেন। (সুরা : কদর, আয়াত : ৪)।
১৭. মুসলিমরা অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি দান-সদকা করে। (বুখারি, হাদিস : ৬)।
১৮. এটি গুনাহ মাফের মাস। (ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৬৪২)
১৯. আল্লাহ অসংখ্য রোজাদারকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। (প্রাগুক্ত)।
২০. এই মাসে মানুষ পরস্পরের প্রতি বেশি দয়া ও সহমর্মিতা দেখায়।
২১. আল্লাহ এ মাসে নেকির পরিমাণ বহুগুণ বাড়িয়ে দেন। (তিরমিজি, হাদিস : ৬৬৩)।
২২. অন্যান্য মাসের তুলনায় মসজিদগুলো অধিক পরিপূর্ণ থাকে।
২৩. রোজাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিশকের সুগন্ধির চেয়েও প্রিয়। (তিরমিজি, হাদিস : ৭৬৪)।
২৪. সাহরির খাবার ও পানীয়তে রয়েছে বিশেষ বরকত। (বুখারি, হাদিস : ১৯২৩)।
২৫. মুসলিমদের মধ্যে পাপাচার কমে যায়, তাদের অনেকে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য সব কাজ থেকে অবসর নিয়ে ইতিকাফ করে। আমাদের নবীজি (সা.)-ও ইন্তেকালের আগ পর্যন্ত প্রতিবছর ইতিকাফ করতেন। (বুখারি, হাদিস : ২০২৬)।
২৬. অন্যান্য মাসের তুলনায় এ মাসে নেক কাজের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।
২৭. দোয়া কবুল হওয়ার অন্যতম সময় এটি। (বায়হাকি, হাদিস : ৬৬১৯)।
২৮. কিয়ামতের দিন রোজা রোজাদারদের জন্য সুপারিশ করবে। (বায়হাকি)।
২৯. রোজা রাখার মাধ্যমে বান্দার আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক আরো দৃঢ় হয়।
৩০. এ মাসের শুরু হয় মুসলিমদের আনন্দে, আর শেষ হয় ঈদুল ফিতরের খুশিতে।
এককথায় রোজা ইবাদতের এক মহান প্রশিক্ষণ, যা আত্মসংযমের ঢালস্বরূপ, আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের মাধ্যম, চরিত্র গঠনের শ্রেষ্ঠ উপায়। প্রত্যেক মুমিনের উচিত রমজানের প্রতিটি মুহূর্তকে গুরুত্ব দেওয়া।