‘মোখা’ আতঙ্কে সাগর পাড়ে মানুষের নির্ঘুম রাত

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি:

ঘূর্ণিঝড় মোখা আতঙ্কে র্নিঘুম রাত কাটিয়েছে সাগর পাড়ের মানুষ। সবারই দৃষ্টি ছিল, নদী কিংবা সাগরের দিকে। কতটুকু পানি বৃদ্ধি পেয়েছে কিংবা বাতাসের গতিবেগ কতটা- এটাই ছিল আলোচনার বিষয়।

এদিকে রবিবার দুপুরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় কোন দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে বাতাসের গতিবেগ স্বাভাবিক ছিল, নদীতে পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। আকাশ সারাদিনই ছিল মেঘাচ্ছন্ন। বন্যা আতংকে শহর কিংবা গ্রামে লোকজনের আনাগোনা ছিল খুবই কম।

স্থানীয় বাসিন্দা ও জেলেরা জানায়, কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগর স্বাভাবিকের চেয়ে উত্তাল রয়েছে। গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা বন্ধ রেখে জেলেরা ট্রলার নিয়ে মৎস্যবন্দর মহিপুর ও আলীপুর আড়ৎ ঘাটসহ বিভিন্ন পয়েন্টে আশ্রয়ের জন্য নোঙর করে রেখেছে। এদিকে রবিবার দুপুরে সৈকত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, চিরচেনা ১৮ কিলোমিটার দীর্ঘ কুয়াকাটা সৈকতে নেই কোন পর্যটক। অল্প কিছু লোকের দেখা মিললেও তারা হচ্ছে মূলত স্থানীয়, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মী।
এদিকে উপজেলার টিয়াখালী ইউনিয়নের ইটবাড়িয়া গ্রামের অধিবাসী মো.ইউসুফ আলী বলেন, ঘূর্ণিঝড় সিডরে আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এবার এ ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে আমরা নিঃস্ব হয়ে যেতাম। মহিপুর ইউনিয়নের বিপনপুর গ্রামের বাসিন্দা রাজ্জাক মিয়া বলেন, আল্লায় মোগো রক্ষা করছে, সিডরে যে চুবানি খাইছি, হ্যা ভুইল্যা যাই নাই। পোলাপান লইয়া দিন থাকতেই আশ্রয় কেন্দ্রে গেছি। তবে আতংকে রাইতে ঘুমাইতে পারেনি বলে তিনি জানান।

কুয়াকাটার হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ সাংবাদিকদের জানান, ঘূর্ণিঝড়ের খবর পাওয়ার পর থেকে সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশে কুয়াকাটার আবাসিক হোটেল মোটেলগুলো আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খোলা রাখা হয়েছে।
উপজেলা সিপিপি সহকারী পরিচালক মো.আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় সিপিপি উপজেলার ১৫৮টি ইউনিটের ৩১৬০ জন সেচ্ছাসেবক সক্রিয় অবস্থানে ছিল।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ঘূর্ণিঝড় মোখার মোকাবিলায় উপজেলার ১৭৫ আশ্রয়কেন্দ্র ও ১৯টি মুজিব কিল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতে আশ্রয় নেওয়ার পর মানুষজন যেন ভালোভাবে থাকতে পারেন, সে জন্য আশ্রয়কেন্দ্রে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থাসহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভার জন্য ১৪টি মেডিকেল টিমসহ শুকনা খাবার, বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights