ওভালে অজিদের পাল্টা জবাব, শেষ দিনে দরকার ২৪৯ রান
অনলাইন ডেস্ক
সামনে বড় লক্ষ্য। জিততে হলে গড়তে হবে রেকর্ড। সেই অভিযানে শুরুটা বেশ ভালো হলো অস্ট্রেলিয়ার। ডেভিড ওয়ার্নার ও উসমান খাওয়াজার উদ্বোধনী জুটি পেরিয়ে গেল শতরান। যদিও তাদের দারুণ পথচলায় পানি ঢেলে দিল বৃষ্টি।
ওভালে অ্যাশেজের শেষ টেস্টের চতুর্থ দিনের অর্ধেকই বৃষ্টিতে ভেসে গেল। খেলা হতে পারল কেবল ৪০ ওভার। পঞ্চম দিনে জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন এখনও ২৪৯ রান, হাতে উইকেট সবগুলি। ৩৮৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় রবিবার (৩০ জুলাই) দিনের খেলা পরিত্যক্ত হওয়ার আগে সফরকারীদের সংগ্রহ বিনা উইকেটে ১৩৫ রান। শেষ দিন সোমবার (৩১ জুলাই) জয়ের জন্য অজিদের প্রয়োজন ২৪৯ রান এবং ইংলিশদের প্রয়োজন ১০ উইকেট।
২০০৯ সালে লর্ডসে অ্যালিস্টার কুক ও অ্যান্ড্রু স্ট্রাউসের ১৯৬ রানের জুটির পর ইংল্যান্ডের মাটিতে অ্যাশেজ টেস্টে সবচেয়ে বড় উদ্বোধনী জুটি এটিই। ২০১৫ সালের পর এই প্রথম ইংল্যান্ডে অ্যাশেজ টেস্টে শতরানের উদ্বোধনী জুটি পেল অস্ট্রেলিয়া। সেবার এই মাঠেই ১১০ রানের জুটিতে ওয়ার্নারের সঙ্গী ছিলেন ক্রিস রজার্স। এই মাঠে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে চতুর্থ ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার প্রথম শতরানের উদ্বোধনী জুটিও এটি। ৩৬ বছর বয়সী দুই ওপেনার খাওয়াজা খেলছেন ১৩০ বলে ৬৯ রানে। ৯৯ বলে ৫৮ রানে অপরাজিত আছেন ওয়ার্নার।
ওভালে চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ২৬৩ রানের লক্ষ্য তাড়ায় জয়ের রেকর্ড আছে ইংল্যান্ডের, সেটিও ১৯০২ সালের অ্যাশেজে। তার চেয়ে এবার ১২১ রান বেশি করতে হবে অস্ট্রেলিয়াকে। চলমান টেস্টের ৩৮৪ এর চেয়ে বেশি রান তাড়ায় কেবল একবারই টেস্ট জিততে পেরেছে অস্ট্রেলিয়া। সেটি অবশ্য ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই, ১৯৪৮ সালের অ্যাশেজে হেডিংলিতে স্যার ডন ব্র্যাডম্যানের নেতৃত্বাধীন অস্ট্রেলিয়া ৪০৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করে ম্যাচ জিতেছিল ৭ উইকেটে। ওভালে চতুর্থ দিনেও উইকেট ছিল যথেষ্ট ব্যাটিং সহায়ক। শেষ দিনে বৃষ্টি বাগড়া না দিলে জয়ের ভালো সুযোগই থাকবে আগেই অ্যাশেজ ধরে রাখা অস্ট্রেলিয়ার সামনে।
চতুর্থ দিনে ইংল্যান্ডের ইনিংস টেকে কেবল ১১ বল। তৃতীয় দিনের ৯ উইকেটে ৩৮৯ রানের সঙ্গে আর ৬ রান যোগ স্বাগতিকদের দ্বিতীয় ইনিংস থামে ৩৯৫ রানে। আগের দিন এই ম্যাচ দিয়ে ক্রিকেট ছাড়ার ঘোষণা দেওয়া স্টুয়ার্ট ব্রডকে চতুর্থ দিনে ব্যাটিংয়ে নামার সময় ‘গার্ড অব অনার’ দেয় অস্ট্রেলিয়ার খেলোয়াড়রা। দিনের প্রথম ওভারে মিচেল স্টার্ককে ছক্কায় ওড়ান ব্রড। সেটিই হয়ে থাকে পেশাদার ক্রিকেটে ব্যাট হাতে তার শেষ বল। পরের ওভারে ‘বার্থ ডে বয়’ জেমস অ্যান্ডারসনকে এলবিডব্লিউ করে চতুর্থ শিকার ধরেন অফ স্পিনার টড মার্ফি। একটা সময় চারশ ছাড়ানো লক্ষ্য দেওয়ার সম্ভাবনা জাগানো ইংল্যান্ড শেষ ৬ উইকেট হারায় ৬৩ রানের মধ্যে।
রান তাড়ায় দেখেশুনে শুরু করেন ওয়ার্নার ও খাওয়াজা। দুই ব্যাটসম্যান কোনো সুযোগই দেননি ইংলিশ বোলারদের। লাঞ্চের আগে ২৪ ওভারে দুজন যোগ করেন ৭৫ রান। দ্বিতীয় সেশনে অ্যান্ডারসন একটি ‘বিমার’ মারেন ওয়ার্নারকে। বুক উচ্চতার ওই ‘নো’ বল স্লিপের ওপর দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠান অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার। ফিফটি করেন তিনি ৯০ বলে। খাওয়াজার পঞ্চশ ছুঁতে লাগে ১১০ বল। টেস্টে পাঁচ হাজার রানের মাইলফলকও তিনি স্পর্শ করেন এ দিন।
বিস্ময়করভাবে মার্ক উডকে বোলিংয়ে আনা হয় ৩২ ওভার পরে, ষষ্ঠ বোলার হিসেবে। গতিময় এই বোলারের একটি বাউন্সার আঘাত হানে খাওয়াজার হেলমেটে। পরের ওভারে পানি পানের বিরতির সময় নামে বৃষ্টি। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পরও আর খেলা শুরু করা যায়নি। বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে দিনের খেলা পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন আম্পায়াররা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ২৮৩
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ২৯৫
ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: (আগের দিন ৩৮৯/৯) ৮১.৫ ওভারে ৩৯৫ (ব্রড ৮*, অ্যান্ডারসন ৮; স্টার্ক ২০-২-১০০-৪, হেইজেলউড ১৫-০-৬৭-১, কামিন্স ১৬-০-৭৯-১, মার্শ ৮-০-৩৫-০, মার্ফি ২২.৫-০-১১০-৪)
অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৩৮৪) ৩৮ ওভারে ১৩৫/০ (ওয়ার্নার ৫৮*, খাওয়াজা ৬৯*; ব্রড ৬-২-১৫-০, অ্যান্ডারসন ১০-৪-৩৪-০, ওকস ৫-৩-৫-০, মইন ৫-০-১৯-০, রুট ৯-০-৩৯-০, উড ৩-০-১৬-০)