দুমকিতে চাচিকে ধর্ষণ মামলায় যুব সংহতির নেতা গ্রেফতার

দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

চাচিকে জোরপূর্বক ধর্ষণ ও ঘটনার ভিডিও ধারণের মামলায় প্রধান আসামি পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলা যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক মো. অলিউল্লাহ হাওলাদারকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে র‌্যাব।

র‌্যাব-৮ পটুয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক মেজর সোহেল রানা জানান, গত ৭ মার্চ পটুয়াখালী থানায় মামলা গ্রহণের পর থেকে আসামিকে গ্রেফতারে তৎপরতা শুরু করে র‌্যাব। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে দুমকি থেকে পটুয়াখালী ঢোকার পথে তারা অলিউল্লাহকে গ্রেফতার করেন। এসময় অলিউল্লাহর সাথে থাকা মোটর সাইকেল, মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ ইত্যাদি জব্দ করা হয়। বেলা ৩ টার দিকে তাকে পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়।

পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জসিম জানান, চাচিকে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি অলিউল্লাহ হাওলাদারকে হস্তান্তরের পর আদালতে সোপার্দ করা হয়েছে। আদালত তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে। মামলার অন্য দুই আসামিকে গ্রেফতারে তৎপরতা চলমান রয়েছে।
গত ৩ মার্চ ধর্ষণের শিকার হয়ে ভুক্তভোগী নারী ঘটনার তিনদিন পর পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পিটিশন মামলা হিসাবে নিবন্ধন করাসহ পটুয়াখালী সদর থানায় নিয়মিত মামলা গ্রহণ এবং তদন্ত করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেন।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ভুক্তভোগী নারী তিন সন্তানের জননী। ১৫ বছর আগে তার স্বামী মারা যায়। স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি সন্তানদের লালন-পালন করে বড় ছেলে ও মেয়েকে বিবাহ দেন, ছোট ছেলে ঢাকায় পড়াশোনা করেন। তিনি একা স্বামীর বাড়িতে বসবাস করেন।

অভিযুক্ত ১নং আসামির বাড়ি তার বাড়ির পাশাপাশি হওয়ায় অলিউল্লাহ প্রায়ই ভুক্তভোগীর বাড়ি আসা-যাওয়া করতো এবং বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিত। বিগত ৬ মাস পূর্বে ১নং আসামি ভুক্তভোগীর বাড়িতে গিয়ে তাকে একা পেয়ে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং তা ভিডিও করে। পরবর্তীতে ১নং আসামি ভুক্তভোগীকে তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক না করলে গোপন ভিডিও ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেয়। গত ৩ মার্চ রবিবার ১নং আসামি, ২ ও ৩ নং আসামি যথাক্রমে মো. মামুন হাওলাদার (৪০) ও মো. বেল্লাল হাওলাদারের মাধ্যমে বিয়ের কথা বলে ভুক্তভোগীকে পটুয়াখালী পৌরসভার শান্তিবাগ এলাকার মেহেদী ভিলায় নিয়ে যায়। পরে ১নং আসামি তাকে বিয়ে না করে হত্যা ও পূর্বের ধারণকৃত পর্নোগ্রাফি ভিডিও প্রকাশের ভয় দেখিয়ে ফের জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় আসামির হাত থেকে বাঁচার জন্য জোড়াজুড়ি করলে ১নং আসামি কপালে ঘুসি মারে ও নাকে-মুখে হাত দিয়ে আঘাত করে। এতে ভুক্তভোগীর দুই পাশের গালে আছড় পড়ে। এ ঘটনার পর আসামি ভুক্তভোগীকে একদিন আটকে রাখে। পরবর্তীতে পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর থানায় মামলা না নেওয়ায় ভুক্তভোগী পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

What do you like about this page?

0 / 400

Verified by MonsterInsights