আশ্রয় কেন্দ্রে শিশুর জম্ম, বন্যার ভয়াবহতা স্পর্শ করেনি রুমাইসাকে

লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

রুমাইসা জান্নাত সাজদা, বানের জলে ভোগান্তি আর হাহাকারের মধ্যে যেন স্বস্তির এক নাম। লক্ষ্মীপুরের এক আশ্রয় কেন্দ্রে মাত্র ৬ দিন আগে জম্ম নিয়েছে শিশুটি। ভয়াবহ দুর্যোগে বাড়ি থেকে বের হয়ে আশ্রয় কেন্দ্রে উঠার পর গভীর রাত (৩টার দিকে) জম্ম হয় তার।

অন্য আশ্রিতদের মানবিক সহায়তায় সুস্থ রয়েছে মা ও তার শিশু কন্যা। তাইতো আদর্শ শিক্ষাই শিক্ষিত করে মেয়ে রুমাইসা জান্নাত সাজদাকে মানবসেবায় নিয়োজিত করার ইচ্ছা তার গর্ভধারিনী মায়ের। এদিকে, আশ্রয় কেন্দ্রে শিশুদের চিকিৎসায় দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা।

জানা যায়, ভয়াবহ বন্যার কবলে লক্ষ্মীপুর। ঘরে বাইরে সবদিকে থৈ থৈ করছে পানি। চারিদিকে আতঙ্ক হাহাকার আর দিশেহারা মানুষ। তবে স্বস্তির কথা এর মাঝে পরম নিশ্চিন্তে মায়ের কোলজুড়ে শিশু রুমাইসা ঘুমাচ্ছে। বন্যার এই আতঙ্ক স্পর্শ করেনি এ নবজাতককে। লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের আইডিয়াল আলিম মাদ্রাসাকে বানানো হয়েছে আশ্রয় কেন্দ্র। আশ্রয় নিয়েছে বন্যার্তরা। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় হাসপাতালে নেয়া সম্ভব হয়নি মা সুমি আক্তারকে। এ আশ্রয় কেন্দ্রেই গত মঙ্গলবার রাত ৩টার দিকে জম্ম নিয়েছে রুমাইসা।

আশ্রিতরা ও আশ্রয় দেয়া নারীর সহযোগিতায় জম্ম নেয়া এ শিশুকে সহযোগিতা করেছেন সবাই। আদর যত্নে সবার কোলে কোলে তাকে লালনপালন করা হচ্ছে এখন। তাই বড় হয়ে রুমাইসা জান্নাত সাজদাকে মানবতার সেবায় নিয়োজিত রাখতে আদর্শ শিক্ষায় শিক্ষিত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেন স্বজনরা।
মা সুমি আক্তার বলেন, পৌর শহরের সাহাপুরে স্বামীর বাড়িতে থাকেন। বন্যায় হঠাৎ ঘরে পানি উঠে গেছে। ছুটে এসেছেন আশ্রয় কেন্দ্রে। রাতে সন্তান (২য় কন্যা) প্রসব হয় তার। পাশে থাকা অন্য নারীদের সহায়তা ও পরিচর্যায় নবজাতকসহ ভালো আছেন তিনি। এই সন্তানকে আদর্শ শিক্ষায় শিক্ষিত করে মানব সেবায় নিয়োজিত করতে চান তিনি।

রুমাইসা ছাড়াও এ আশ্রয় কেন্দ্রে রয়েছে আরো বেশ কয়েকজন শিশু। একইভাবে জেলার অন্য আশ্রয় কেন্দ্রেও রয়েছে শিশুরা। একদিকে বৈরী আবহাওয়া অন্যদিকে খাদ্য ও সুপেয় পানির সঙ্কটে অসুস্থ হয়ে পড়ছে কেউ কেউ। তাই এসব শিশুর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের দাবি জানান সকল মা-বাবা। স্থানীয় আইডিয়াল আলীম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও আশ্রয়দাতা কাউসার আক্তারও একই দাবী করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights