উজিরপুরে সন্ধ্যা নদীতে ভাঙন
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল:
বরিশালের উজিরপুরে সন্ধ্যা নদীর অব্যহত ভাঙনে বিলীন হয়েছে বসত বাড়ি, রাস্তাঘাট, স্কুল, মসজিদ, মন্দির, বিভিন্ন স্থাপনা, বাগান ও ফসলি জমি। বসতঘর হারিয়ে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে শত শত মানুষ। নদী ভাঙন প্রবল হওয়ায় হুমকিতে পড়েছে উজিরপুর সাতলার গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ সড়ক।
উজিরপুর উপজেলার উপর দিয়ে প্রবাহিত সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গনে প্রতিবছর ভিটে মাটি হারিয়ে ভূমিহীন হচ্ছে শত পরিবার। গত দুই সপ্তাহ ধরে ব্যাপক ভাঙ্গনে বরাকোঠা ইউনিয়নের নাড়িকেলী গ্রামের ৫০টি’র বেশি পরিবারের ঘরবাড়ি ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এছাড়া কলেজ, মন্দির, চথলবাড়ী মা ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র, স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ ও গ্রাম্য সড়কও নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে।
গৃহবধূ আকলিমা বেগম জানান, সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গনের মাত্রা গত কিছুদিন ধরে বেড়েছে। আকস্মিক ভাঙ্গনে মৃধা বাড়ির আবদুল মোতালেব, আবুল বাশার, আদম আলী, মো. আব্বাস, মনির হোসেন, মো. কালু ও জাকির মৃধার বসত ঘর বিলীন হয়ে গেছে।
নাড়িকেলী গ্রামের অরুন মন্ডল জানান, অব্যহত ভাঙ্গনে সম্প্রতি শত বছরের পুরনো অবিনাশ ডাক্তারের বাড়ির মাজু বৈরাগী, রনজিত বাড়ৈ, পরিতোষ মন্ডল ও অমূল্যর বাড়ি ছাড়াও এর আগে গত বছর নদী ভাঙ্গনে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের কাব্যতীর্থ কলেজ, মন্দির, চথলবাড়ী মা ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র, স্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ চলাচলের রাস্তা নদীতে বিলীন হয়েছে। এখনও নদী ভাঙ্গনের হুমকিতে রয়েছে নদী তীরবর্তী হাজারো পরিবার। ক্ষতিগ্রস্থ ও হুমকীর মুখে থাকা পরিবারগুলো দ্রুত নদী ভাঙ্গনে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
সন্ধ্যা নদী ভাংগনে শত শত পরিবার নিঃস্ব হওয়ার কথা স্বীকার করে তাদের পুনর্বাসনে যথযথ ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বরাকোঠা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম মৃধা।
এ বিষয়ে উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারিহা তানজিম বলেন, নদী ভাঙ্গন কবলিত এলাকার বিষয়ে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাকে অবহিত করা হয়েছে। তারা ভাঙ্গন প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে গৃহহীন পরিবারগুলোকে চাল দেয়ার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব হোসেন জানান, উজিরপুরের নাড়িকেলী গ্রাম রক্ষায় সন্ধ্যা নদীর তীরে বালুর বস্তা (জিও ব্যাগ) ফেলে ভাঙ্গন প্রতিরোধের জন্য দরপত্রের মাধ্যমে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। শিঘ্রই জিও ব্যাগ ফালানোর কাজ শুরুর আশ্বাস দেন তিনি।