টাকা ভাগাভাগি নিয়ে মাগুরায় বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, মামলা

মাগুরা প্রতিনিধি

মাগুরায় বাস-টেম্পু স্ট্যান্ড দখল ও ঠিকাদারী কাজের টাকার ভাগাভাগি নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় মাগুরা সদর থানায় মামলা হয়েছে।

গত শুক্রবার ও শনিবার থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের ভায়না মোড় বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এ সংঘর্ষ শুরু হয়। শনিবার সকালে আবারো দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে সেনাবাহিনী ও পুলিশ ঘটনাস্থালে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ১৫ জন আহত হয়েছে। এ ঘটনায় ৩ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

গুরুতর আহতদের মধ্যে আব্দুর রহিম (২৮), আব্দুর রহমান (২৯), রকিবুল (২৫), নওশের (৪২), সুমন (৩০) ও আলিম শেখকে (৫৫) প্রথমে মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এদের মধ্যে অধিক গুরুতর ৩ জনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকাতে পাঠানো হয়েছে। তারা হচ্ছেন আব্দুর রহমান, আব্দুর রহিম ও নওশের।
এদিকে এ ঘটনায় শনিবার আমির শেখ বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করেছেন। ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে আটক ৩ জন হচ্ছেন যুবদল নেতা রাসেল, কৃষক দল নেতা অপু ও কামরান মোল্যা।

হাসপাতালে ভর্তি আলিম শেখ বলেন, বিকালে একই এলাকার মোসলেম এর ছেলে সিনবাদ কয়েকজন সঙ্গী নিয়ে মোটরসাইকেলে করে আব্দুর রহিম এর বাড়ির সামনে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগান দেয়। এ সময় আব্দুর রহিম সিনবাদকে বলে আমরা বিএনপি করি আমাদের বাড়ির সামনে ‘জয় বাংল’ শ্লোগান দিচ্ছিস কেন বলে তর্কে জড়ায়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’জনের মধ্যে তর্ক ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যায় সিনবাদ তার সঙ্গীদের নিয়ে দেশীয় অস্ত্রধারীদের নিয়ে আমাদের উপর হামলা করে।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতাকর্মীরা জানিয়েছে, ভায়না মোড়ে বাস-টেম্পু স্ট্যান্ড দখল ও সম্প্রতি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ঠিকাদারী কাজের নেগোসিয়েশনের টাকার ভাগাভাগি নিয়ে নিজেদের দলের মধ্যে বিরোধ চলছিলো। যাকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের সূচনা। প্রতিপক্ষের হামলায় জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আশরাফুজ্জামান শামীমের বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ভায়না এলাকা এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরবর্তী সহিংসতা এড়াতে এলাকায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ অবস্থান করছে।

জেলা যুবদলের সভাপতি এ্যাডভোকেট ওয়াশিকুর রহমান কল্লোল বলেন, যুবদলের নেতাকর্মীরা এ সংঘর্ষের সাথে জড়িত নয়। ভায়নার মোড়ের বাসস্ট্যান্ড ও টেম্পু স্ট্যান্ড রয়েছে সেখানে স্থানীয়রা নিজেদের দখল নিয়ে এ সংঘর্ষ হতে পারে।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আশরাফুজ্জামান শামীম জানান, স্থানীয় মাদক কারবারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় বাসিন্দারা কথা বলায় ওই সব মাদকসেবী ও বিক্রেতারা জোট বদ্ধ হয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। এর সাথে স্বেচ্ছাসেবক দলের কোনো নেতাকর্মী জড়িত নয়।

মাগুরা সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) শেখ মেহেদী রাসেল বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বর্তমানে এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় আমির শেখ নামে এক ব্যক্তি ২০ জনের নাম এজহারভুক্ত ও অজ্ঞাত ২০ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন। ঘটনার সাথে জড়িত ৩ জনকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা আটক করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights