অনুমোদনহীন আজিজ কো-অপারেটিভ এর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ

আব্দুস সালাম, দিনাজপুর প্রতিনিধি ॥ দিনাজপুরে হায় হায় কোম্পানি নামে খ্যাত আজিজ কো- অপারেটিভ কমার্স এন্ড ফাইন্যান্স ব্যাংক লি. গ্রাহকদের হয়রানি করছে প্রতিনিয়ত। এখন একমাত্র পুঁজি হিসেবে বেছে নিয়েছে গ্রাহকদের জমাকৃত ফাঁকা চেকের পাতা। সেখানে ইচ্ছেমতো টাকার পরিমাণ বসিয়ে শত শত গ্রাহকদের নিকট কয়েক কোটি টাকা আদায়ের টার্গেট নিয়ে একের এর এক মিথ্যা মামলা করছে অত্র প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মো. হোসেন আলী নিজেই। গ্রাহকেরা তাদের পাশ বইয়ে টাকা পরিশোধ করা স্বত্তেও চতুর ম্যানেজার পাশ বইয়ে টাকা আদায় হলেও তিনি এখন গ্রাহকদের জমাকৃত ফাঁকা চেকে ইচ্ছেমতো টাকা বসিয়ে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিচ্ছেন গ্রাহকদের এই মর্মে গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী কয়েকজন গ্রাহক দিনাজপুর শহরস্থ এলাকার (গুলশান মার্কেট) সংলগ্ন আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স এন্ড ফাইন্যান্স ব্যাংক লি. এর (দিনাজপুর শাখা) অফিসের ম্যানেজার মো. হোসেন আলির বিরুদ্ধে চেক জালিয়াতির অভিযোগ করেছেন বলে জানিয়েছেন গ্রাহক নিজেই। ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা দ্রুত অনুমোদনহীন এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানিয়েছেন। যে কোনো সময় গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন গ্রাহকেরা।

এমনিতেই দেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংক গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে পারছে না আবার এই প্রতিষ্ঠানও গ্রাহকদের টাকা ফেরত দিতে ঘুরাচ্ছেন দিনের পর দিন। ইতোমধ্যে ১৩ থানা সহ উত্তরবঙ্গের জেলা (প গড়, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, রংপুর, সৈয়দপুর, লালমনিরহাটসহ) বিভিন্ন জেলা/উপজেলায় গ্রাহকের টাকা তোলার হিড়িক পড়েছে কিন্তু আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স এন্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড বেশির ভাগ শাখায় টাকা ফেরতের নামে টাল-বাহানা করছেন। গ্রাহকেরা পড়েছেন মহাবিপাকে। যে কোন সময় এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা গা ঢাকা দিতে পারেন এবং কোটি কোটি টাকা লোপাটেরও সম্ভাবনা রয়েছে।

একাধিক গ্রাহকের নিকট জানা গেছে, আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড দিনাজপুর জেলা শাখা এ অ লের গ্রাহকদের প্রায় (১০ কোটি) টাকা নিয়ে টালবাহানা করে চলেছে। নানা প্রলোভন দেখিয়ে (এফ.ডি.আর) স য় ও নানা ভার্সনের লগ্নির নামে অর্থ গ্রহণ করলেও এখন চোখ পালটি দিচ্ছে গত কয়েক বছর। দিনের পর দিন ঘুরানো হচ্ছে মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়া গ্রাহকদের। টাকা ঢাকায় আটকে আছে দোহাই দিয়ে কালক্ষেপণ করছেন দিনাজপুর শাখার কর্মকর্তারা। অফিস কখনও, কখনওবা খোলা স্টাইলে চালানো হচ্ছে। প্রতারক মো. হোসেন আলী নামে ম্যানেজার অফিসের কর্তা ব্যক্তি। দফায় দফায় নতুন তারিখ দিয়েও প্রতারণা করে চলেছেন। আর নিজে অল্প দিনেই ধনী বনে গেছেন। দিনাজপুর সদর পাহাড়পুর এলাকার মীর মোকতার আলী নামে একজন ব্যবসায়ী ও অন্য মামুনুর রসিদ আরেক ব্যবসায়ী তাদের প্রতারণার শিকার হওয়ার ব্যাপারে তথ্য দিলে আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড নিয়ে খোঁজ খবর নেয়া শুরু হয় এবং বেরিয়ে আসে একের পর এক জালিয়াতির খবর।

মিডিয়াকর্মীর কয়েকজন সরেজমিনে গিয়ে সরাসরি উক্ত শাখা ব্যবস্থাপক মো. হোসেন আলির কাছে মীর মোকতার আলির (৩৫০০০/- ) হাজার টাকার হিসাব এবং মামুনুর রশিদের (৪৭৫০০/-) হাজার টাকার লেজার বই দেখতে চাইলে তিনি কোন বই কিংবা ডকুমেন্ট দেখাতে পারেননি। উলটো উত্তেজিত হয়ে তিনি (বড় বড়) সাংবাদিকদের সাথে এবং নেতার সাথে পরিচয় আছে বলে বিষয়টি নিয়ে আর কোন কথা বলেননি। ভুক্তভোগী অনেক গ্রাহকের অভিযোগ ও একাধিক সূত্রে তথ্য মিলেছে, দেশের বিভিন্ন শাখায় গ্রাহকদের কাছ থেকে (২৬০ কোটি টাকা) গ্রহণ করে আজিজ কো-অপারেটিভ কমার্স অ্যান্ড ফাইন্যান্স ক্রেডিট সোসাইটি লিমিটেড। এর মধ্যে প্রায় (একশ’ কোটি) টাকার হদিস নেই বলে বাংলাদেশ ব্যাংক বছর কয়েক আগে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করার কোনও এখতিয়ার আজিজ কো-অপারেটিভের নেই। বিষয়টি ঝুঁকিপূর্ণ বলেও বলা হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights