আচরণবিধি ও প্রচারে আসছে পরিবর্তন

গোলাম রাব্বানী

জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও স্থানীয় সরকারের নির্বাচনের আচরণবিধি ও প্রচার-প্রচারণায় আসছে বড় ধরনের পরিবর্তন। এ জন্য নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী নির্বাচনি আচরণবিধিমালা পরিবর্তনের পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন। সংশ্লিষ্ট শাখাগুলো এ নিয়ে কাজ শুরু করেছে। তবে সংস্কার কমিশনের কোন কোন সুপারিশ বাস্তবায়নে কবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসে এ অপেক্ষায় রয়েছে নির্বাচন কমিশন। এদিকে, নির্বাচনি প্রচারে ব্যানার, তোরণ ও পোস্টার ব্যবহারের পরিবর্তে লিফলেটে প্রচার-প্রচারণা করার সুপারিশ দিয়েছে সংস্কার কমিশন।

ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, ইসির সংস্কার কমিশন নির্বাচনি আচরণবিধিতে বেশ কিছু পরিবর্তনের সুপারিশ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে ব্যানার, তোরণ ও পোস্টারের পরিবর্তে লিফলেট, ভোটার-প্রার্থী মুখোমুখি অনুষ্ঠান, পত্র-পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ও সরকারি গণমাধ্যমে প্রচারের সম-সুযোগ প্রদানের বিধান করা। এ ছাড়া আছে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৪ মেনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচারণার বিধান করা এবং ১৯৯০ সালের তিন জোটের রূপরেখার মতো রাজনৈতিক দলের জন্য আচরণবিধি প্রণয়ন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সুপারিশগুলো ইসি আনুষ্ঠানিকভাবে পর্যালোচনা করেই কাজের নির্দেশনা দেবেন। তবে আমরাও প্রাথমিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখছি। যাতে নির্দেশনা এলেই দ্রুত কাজগুলো করতে পারি।

স্থানীয় সরকার নির্বাচন সংক্রান্ত সুপারিশে বলা হয়েছে, একটি স্থায়ী ‘স্থানীয় সরকার কমিশন’ গঠন করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আয়োজন করা। স্থানীয় সরকার নির্বাচন নির্দলীয় করার জন্য আইন সংশোধন করা। সব স্থানীয় সরকার নির্বাচন প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের এবং মেম্বার/কাউন্সিলরদের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সিদ্ধান্ত গ্রহণে অর্থবহ ভূমিকা নিশ্চিত করার বিধান করা ইত্যাদি। এদিকে, সুপারিশ বাস্তবায়নের বিষয়ে নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, নির্বাচনের দুর্নীতিমুক্ত রাখতে দুর্বৃত্ত ও মানবতাবিরোধী অপরাধীরা যেন নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে, সেজন্য সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থ সংস্কারের ক্ষেত্রে চারটি অংশীজন। বল এখন তাদের কোর্টে। প্রথম হচ্ছে সরকার। তারপর নির্বাচন কমিশন। তৃতীয়টি হচ্ছে রাজনীতিক দল। এর সব চেয়ে বড় অংশীজন হচ্ছে সাধারণ জনগণ। তবে সাধারণ জনগণ সোচ্চার হলে সব কিছুই হবে। তিনি আরও বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থা সুপারিশ নিয়ে যেসব প্রতিক্রিয়া পেয়েছি তা ইতিবাচক। নির্বাচন কমিশনও এটা ভালোভাবে নিয়েছে। সামনের দিনে নির্বাচন কমিশন যেন সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারে সেজন্য আইনি কাঠামো তৈরি এবং অতীতের ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য দায়বদ্ধতার সুপারিশ করেছি। উল্লেখ্য, নির্বাচনব্যবস্থা নিয়ে সংস্কার প্রস্তাব তৈরির জন্য গত ৩ অক্টোবর কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ১৫ জানুয়ারি কমিশন তাদের সুপারিশের সারসংক্ষেপ প্রকাশ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights