ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় খুন: ছয়জনের যাবজ্জীবন

আদালত প্রতিবেদক
ছয় বছর আগে সাভারের গেন্ডা এলাকায় ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করার জেরে ঢাকা কমার্স কলেজের শিক্ষার্থী মারুফ খানকে খুনের দায়ে ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নাজিয়া নাহিদের আদালত এ রায় দেন।

দণ্ডিতরা হলেন- মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, শিমুল হাওলাদার ওরফে শ্যামল, শামীম আলী, ইমরান হোসেন, ফয়সাল আহম্মেদ মোত্তাকিন ও লিটন ওরফে রইচ।

দণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। রায় শেষে আদালত আসামিদের উদ্দেশ্য বলেন, “আপিলের সুযোগ আছে। আপিল করবেন। আল্লাহ সবার মঙ্গল করুন।”

আসামিরা জামিনে ছিলেন। তবে এদিন ফয়সাল আহমেদ আদালতে হাজির হননি। আদালত তার বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। অপর পাঁচ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায় ঘোষণা শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।

এদিকে রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন নিহতের বাবা আতাউর রহমান খান।

জানা গেছে, আসামিরা ভুক্তভোগী মারুফ খানের বান্ধবী মুনাকে ইভটিজিং করতো। ২০১৮ সালের ২১ আগস্ট বিকালে সাভারের গেন্ডা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তারা মুনাকে ইভটিজিং করে। মারুফ এর প্রতিবাদ করে। পরে মারুফ মুনাকে রিকশায় করে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। এরপর সন্ধ্যায় গেন্ডায় আব্দুর রহমানের মোটরসাইকেলের গ্যারেজ সংলগ্ন আসামিরা মারুফের ওপর হামলা চালায়। আসামি মঞ্জু তাকে ছুরিকাঘাত করে। এতে মারাত্মক আহত হন মারুফ। তাকে চিকিৎসার জন্য এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়। সেখানে নেওয়ার পথে মারা যান মারুফ।

এ ঘটনায় মারুফের ভাই লুৎফর রহমান খান মানিক পরদিন ২২ আগস্ট সাভার মডেল থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করে সিআইডি পুলিশের উপ-পরিদর্শক মিজানুর রহমান ২০১৯ সালের ৩ জুলাই আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর ২০২২ সালের ২৩ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরু হয়। মামলার বিচার চলাকালে আদালত চার্জশিটভুক্ত ১৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights