ইরানের প্রত্যাঘাতের শঙ্কায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা

অনলাইন ডেস্ক

সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে ইসরায়েলি হামলার প্রতিশোধের ঘোষণা দিয়ে রেখেছে ইরান। ঘটনার পর থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রত্যাঘাতের হুমকি দিচ্ছেন ইরানের শীর্ষ নেতারা। বলা হচ্ছে, এবার সরাসরি ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে তেহরান। যেকোনও সময় সেই প্রত্যাঘাত চালাতে পারে দেশটি- এমন আশঙ্কায় মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।

জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের মিশন জানিয়েছে, নিরাপত্তা পরিষদ যদি ইসরায়েলি হামালার নিন্দা জানাতো তাহলে হয়তো ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলা এড়ানো যেত।

পশ্চিমা গণ্যমাধের প্রতিবেদনগুলোতে দাবি করা হয় সরাসরি ইসরায়েল অথবা ইসরায়েলের স্বার্থ রয়েছে এমন স্থাপনায় ইরানের হামলা আসন্ন। এরপরই ইরানের পক্ষ থেকে এমন বিবৃতি এল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা এক বার্তায় ইরানের মিশন জানায়, সিরিয়ায় ইরানের কনস্যুলেটে আগ্রাসনের নিন্দা যদি নিরাপত্তা পরিষদ করত তাহলো হয়তো হামলার অপরিহার্যতা থেকে সরে আসা যেত।

গত ১ এপ্রিল ইসরায়েলের চালানো ওই হামলায় ইরানের দুই জেনারেলসহ অন্তত সাতজন নিহত হন। এরপর ইসরায়েলে হামলার চূড়ান্ত অঙ্গীকার করে ইরান।

এদিকে, মধ্যপ্রাচ্যে বিরাজমান পরিস্থিতির কারণে ইরানের রাজধানী তেহরানে ফ্লাইট পরিচালনা স্থগিতের সময় বাড়িয়েছে জার্মান বেসামরিক বিমান পরিবহন সংস্থা লুফথানসা।
লুফথানসা বৃহস্পতিবার বলেছে, ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত তেহরানের সব ফ্লাইট স্থগিত করেছে তারা। এর মধ্য দিয়ে ফ্লাইট স্থগিতের সময় দুই দিন বাড়িয়েছে তারা। লুফথানসার একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, উড়োজাহাজের ক্রুদের যাতে তেহরানে রাতযাপনের জন্য অবতরণ করতে না হয়, সে জন্য গেল সপ্তাহান্ত থেকে ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে তেহরানে ফ্লাইট না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।

পশ্চিমা বিমান সংস্থাগুলোর মধ্যে শুধু লুফথানসা ও এর সহযোগী বিমান পরিবহন সংস্থা অস্ট্রিয়ান এয়ারলাইনসই তেহরানে ফ্লাইট পরিচালনা করে। টার্কিশ এয়ারলাইনস ও মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক বিমান পরিবহন সংস্থাগুলোই সাধারণত সেখানে যাত্রী পরিবহন করে।

লুফথানসার মালিকানাধীন অস্ট্রিয়ান এয়ারলাইনস সপ্তাহে ছয়বার ভিয়েনা থেকে তেহরানে যাত্রী পরিবহন করে। সংস্থাটি বলেছে, তারা এখনো বৃহস্পতিবার তেহরানে ফ্লাইট পরিচালনার পরিকল্পনা করছে। তবে রাতে তেহরানে অবস্থান এড়ানোর চেষ্টা করছে।

তেহরানে ফ্লাইট পরিচালনা করা অন্যান্য বিমান পরিবহন সংস্থার বক্তব্য জানা যায়নি। এমিরেটস ও কাতার এয়ারওয়েজের উত্তর আমেরিকার ফ্লাইটের জন্যও ইরানের আকাশসীমা গুরুত্বপূর্ণ।

এদিকে, এমন উত্তেজনার মধ্যেই ইসরায়েল সফরে গেছেন মার্কিন সেন্ট্রাল কমান্ডের প্রধান জেনারেল মাইকেল কুরিলা।

কুরিলা ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্টের সঙ্গে বৈঠক করবেন। তাদের আলোচনায় গুরুত্ব পাবে ইরানের সম্ভাব্য হামলা।

গত কয়েক দিন ধরেই ইরানের প্রতিশোধমূলক হামলার ব্যাপারে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের মধ্যে যোগাযোগ হচ্ছে। মূলত তেহরানের হামলা প্রতিহত করতে তারা উদ্বিগ্ন। সূত্র: আল জাজিরা, রয়টার্স

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights