উত্তরের ১২ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার উপরে

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলে রংপুরে তিস্তা নদীর পানি বাড়ছে। পানি বিপৎসীমার নিচে থাকলেও নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল, চর ও দ্বীপ চরগুলো প্লাবিত হয়েছে। জেলার গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলায় কয়েক হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

এদিকে তিস্তার তীব্র স্রোতে নদী এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। গত এক সপ্তাহে গঙ্গাচড়া উপজেলায় কমপক্ষে ৪০টি বসতভিটা নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে। এছাড়া উত্তরাঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা, ধরলা, ব্রক্ষপুত্র, যমুনা নদীর ১২টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্চে।

জানা গেছে, গত রবিবার রাত থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় গঙ্গাচড়া উপজেলার কোলকোন্দের পূর্ব বিনবিনা, লক্ষীটারী ইউনিয়নের ইচলির চর, শংকরদহচর, বাগেরহাট ও নোহালী চর, মর্নেয়ার তালপট্টি, নরশিং, গজঘণ্টার গাওছোয়া, আলালচর, ছালাপাক চরে প্রায় ২ হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়ে। এসকল পরিবার গবাদি প্রাণী ও বাড়ির জিনিসপত্র অন্যত্র সরিয়ে নেয়। নিজেদের খাবার সমস্যা থাকলেও গবাদি প্রাণীর খাবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন তারা।
স্থানীয়দের অভিযোগ চার পাঁচ বছর আগে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেলেও তা পুনরায় নির্মাণ না করায় এখন পানি বৃদ্ধি পেলে বাড়িতে পানি উঠে। এদিকে কিছু কিছু এলাকায় তিস্তার ভাঙন দেখা দিয়েছে। তাছাড়া শেখ হাসিনা সেতু রক্ষা বাঁধের ব্লক ধসে যাচ্ছে। এদিকে কাউনিয়া ও পীরগাছা উপজেলায় তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদীর তীরবর্তী এবং নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, ধরলা, দুধকুমার ও ঘাঘট নদীসমূহের পানি সমতল সময় বিশেষে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে। এর ফলে তিস্তা, ধরলা ও দুধকুমার নদীসমূহের পানি সমতল কতিপয় পয়েন্টে স্বল্পমেয়াদে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে এবং ঘাঘট নদী সংলগ্ন গাইবান্ধা জেলার কতিপয় নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি কিছুটা অবনতি হতে পারে। চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহের শুরুতে নদীসমূহের পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে এবং পরবর্তী সময়ে চলমান পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে স্বাভাবিক হয়ে আসতে পারে।

উত্তরাঞ্চলের ১২টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সেগুলো হচ্ছে গাইবান্ধা (ঘাঘট) বিপৎসীমার ৩৭ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া (ব্রহ্মপুত্র) ৭২, হাতিয়া (ব্রহ্মপুত্র) ৮০, চিলমারী (ব্রহ্মপুত্র) ৭৮, ফুলছড়ি (যমুনা) ৮৭, বাহাদুরাবাদ (যমুনা) ৯৩, সাঘাটা (যমুনা) ৯০, সারিয়াকান্দি (যমুনা) ৫২, কাজিপুর (যমুনা) ৩৭, জগন্নাথগঞ্জ (যমুনা) ৯৬, সিরাজগঞ্জ (যমুনা) ৪৩, পোড়াবাড়ী (যমুনা) ১৬ সেন্টিমিটার। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চলের উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে নীলফামারীর ডারিয়ায় ৭৩ মিলিমিটার এবং পঞ্চগড়ে ৫৮ মিলিমিটার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights