ক্রিকেটের তিন মোড়ল ও আইসিসির কঠোর সমালোচনায় উইন্ডিজ

অনলাইন ডেস্ক
আইসিসি ও ক্রিকেটের তিন মোড়লের (ভারত, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড) বিরুদ্ধে ভয়ংকর অভিযোগ তুলেছেন ক্রিকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রধান নির্বাহী জনি গ্রেভ। তার দাবি, আইসিসি ও বড় দলগুলো সবকিছু দিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছে যাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর কখনো মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে।

কয়েক সপ্তাহ আগেই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ২৭ বছর পর টেস্ট জিতেছে ক্যারিবীয়রা।

উইজডেন ক্রিকেট মান্থলির পডকাস্টে ডেনিয়েল গ্যালানের সঙ্গে আলাপে গ্রেভ বলেন, ‘সবাই একটা কথা খুব করে বলে যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দরকার। কিন্তু আমরা যেটা অনুভব করি, সেটা হচ্ছে, বিশ্ব ক্রিকেট তাদের সব রকম চেষ্টা করছে যাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর কখনোই শক্তিশালী হতে না পারে।’
বেশ কিছুদিন ধরেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের কর্মকর্তা থেকে শুরু করে ক্রিকেটার সবাই সোচ্চার আইসিসির নীতির বিরুদ্ধে। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসির আর্থিক কাঠামোর সরাসরি সমালোচনা করতেও দ্বিধা করছেন না তারা। বিগ থ্রির দাপটে অন্যান্য দেশ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, সেই কথাই বারবার বলার চেষ্টা তাদের।

একটা সময় ক্রিকেট বিশ্বে ছড়ি ঘুরিয়েছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। স্যার গ্যারি সোবার্স, ভিভ রিচার্ডস, ক্লাইভ লয়েড, ম্যালকম মার্শাল, জোয়েল গার্নাররা মিলে জিতিয়েছিলেন প্রথম দুই বিশ্বকাপ। এরপর সেই হাল ধরেছিলেন কার্ল হুপার, ব্রায়ান লারা, কার্টলি অ্যামব্রোস কিংবা কোর্টনি ওয়ালশরা।

ক্যারিবীয়রা সবশেষ ১৯৯৬ সালে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে খেলেছিল। ওয়ানডে ক্রিকেটের আরেক বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি তারা জয় করেছিল ২০০৪ সালে। এরপর ২০০৬ আসরে খেলেছিল সেমিফাইনাল। এরপর থেকে ওয়ানডে ফরম্যাটে বলার মত সাফল্য নেই দুইবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের।

এমনকি ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপের জন্য কোয়ালিফাই করতে পারেনি। এবার আবার নতুন করে সেই আর্থিক ইস্যু সামনে আনলেন ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটের কর্তা। উইজডেনের এক পডকাস্টে জনি গ্রেভ বলেন, ‘বিশ্ব ক্রিকেটে শক্তিশালী ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দরকার- আমার মনে আমরা সবাই এই উক্তিতে বিরক্ত।’ তিনি বলেন, ‘আমরা অনুভব করি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেট যেন আর শক্তিশালী না হয়ে উঠতে পারে সে জন্য বিশ্ব ক্রিকেটের প্রতিটি স্তরে যা যা করা প্রয়োজন, সেটাই করছে তারা।’

বিশ্ব ক্রিকেট কিভাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পিছিয়ে দিচ্ছে তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন তিনি, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটকে আগের মতো শক্তিশালী করে তোলাটা অসম্ভব নয়। তেমনি আইসিসি থেকে আরেকটু আর্থিকভাবে সাহায্য পাওয়াটা বড় কোনো বিষয় নয়। আইসিসি হয়তো তহবিল বাড়িয়েছে, কিন্তু আমাদের লভ্যাংশের হার সাত শতাংশ থেকে পাঁচ শতাংশে নামিয়ে এনেছে। এটা আমাদের আরও বড় বাধার কারণ।’

এর আগে বিশ্বকাপ চলাকালে ভারতের মাটিতেই আইসিসির আর্থিক কাঠামোর সমালোচনা করেছিলেন উইন্ডিজের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক ক্লাইভ লয়েড। লয়েড বলেছিলেন, ‘আমি মনে করি, সবার সবকিছুর সমান ভাগ পাওয়া উচিৎ। ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে তাকান ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কি লিভারপুলের চেয়ে বেশি অর্থ পায়? আর্সেনাল কি চেলসির চেয়ে বেশি পায়? না, তারা সমান ভাগ পায়।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights