খরা ও ঝড়, হাড়িভাঙ্গায় স্বপ্ন ভঙ্গের শঙ্কা

নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর

রংপুরে দীর্ঘ খরার কারণে হাড়িভাঙ্গা আম আগের বছরগুলোর তুলনায় আকারে ছোট হয়েছে। অনাবৃষ্টি কাটিয়ে গত সপ্তাহে পর পর কয়েকদিন ঝড়-বৃষ্টি হওয়ায় প্রচুর পরিমাণ আম গাছ থেকে ঝরে পড়েছে। ফলে আমচাষিদের মাঝে কাঙ্ক্ষিত ফলন পাওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। দুশ্চিন্তায় রয়েছেন আমচাষী ও ব্যবসায়ীরা। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, হাড়িভাঙ্গা আম উৎপাদনের ক্ষেত্রে খরা ও ঝড় তেমন প্রভাব ফেলেনি।

বর্তমানে রংপুরের মিঠাপুকুর ও বদরগঞ্জ উপজেলার যেদিকে চোখ যাবে সেদিকেই দেখা যাবে হাড়িভাঙ্গা আমের বাগান। মিঠাপুকুরের আখিরারহাট, মাঠের হাট, খোড়াগাছ, বদরগঞ্জের শ্যামপুর, রংপুর সদরের কিছু এলাকায় কয়েক হাজার আমের বাগান রয়েছে। ওই সব বাগানের আম এই অঞ্চলের অর্থনীতির গতি সচল রাখে। প্রতিবছর হাড়িভাঙ্গাতে কৃষকরা ঘরে তোলেন ২০০ কোটি টাকার ওপর।

মিঠাপুকুর আখিরারহাটে আম ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান বলেন, সাড়ে ১২ একরের বাগানে রয়েছে ১৭’শ আমের গাছ। ১৩ লাখ টাকা দিয়ে বাগান নিয়েছি। সার, ওষুধ দিয়ে আমগুলো ধরে রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে। মুকুল যেভাবে এসেছিল সেই পরিমাণ আম গাছে নেই। খরা ও ঝড়ের কারণে বেশিরভাগ আম ঝড়ে গেছে।

রুপসী এলাকার আম ব্যবসায়ী মিলন মিয়া বলেন, এবার ১০ একর আয়তনের বাগান নিয়েছি। এতে প্রায় ১২’শ গাছ রয়েছে। আমের মুকুল দেখে আমরা অত্যন্ত খুশি ছিলাম। কিন্তু প্রচণ্ড খরার কারণে মুকুল ও গুটি ঝরে গেছে। পরবর্তীতে ঝড় আমের আরও ক্ষতি করেছে। এরপরেও যে আম আছে সেগুলো টিকে গেলে লাভ হবে।
রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, রংপুর জেলায় এ বছর ৩ হাজার ৩১৫ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে হাড়িভাঙ্গা আমের বাগান রয়েছে ১ হাজার ৯০৫ হেক্টর জমিতে। আগামী ২০ জুন হাড়িভাঙ্গা আম বাজারে আসছে। এনিয়ে উপজেলা প্রশাসন সম্প্রতি আম চাষী ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে আলোচনা সভা করেছে। সেই সাথে অপরিপক্ব হাড়িভাঙ্গা আম বাজারজাত ঠেকাতে কঠোর মনিটরিং করবে প্রশাসন বলে জানানো হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল বলেন, ঝড়ে আমের তেমন একটা ক্ষতি হয়নি। আশা করি ফলন ভালো হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights