গাজার চিড়িয়াখানার ক্ষুধার্ত প্রাণীরাও মরতে বসেছে
অনলাইন ডেস্ক
প্রায় ১২ সপ্তাহ ধরে গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচারে হামলা চলছে। এতে মানুষের সঙ্গে মরতে বসেছে গাজার বোবা প্রাণীরাও। দক্ষিণের রাফাহ শহরে একটি চিড়িয়াখানায় ক্ষুধার্ত বানর, তোতা পাখি, সিংহসহ আরো অনেক প্রাণী খাবারের জন্য চিৎকার করছে।
গাজায় বোমাবর্ষণের আঘাতে অঞ্চলটির ২৩ লাখ বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত হয়েছে। অনেক অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সবাই এখন দক্ষিণের রাফাহ শহরের দিকে ছুটছে।ফলে আশ্রয়কেন্দ্র, রাস্তা এবং খালি জায়গাগুলো মানুষে ভরে গেছে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, অনেকে গাজার নানা প্রান্ত থেকে রাফাহর ওই চিড়িয়াখানায় আশ্রয় নিয়েছে। যারা আশ্রয় নিয়েছে তারা বর্ধিত গোমা পরিবারের সদস্য। চিড়িয়াখানায় পশুদের খাঁচার পাশে প্লাস্টিকের তাঁবু টানিয়ে সেখানেই আশ্রয় নিয়েছে।
তারা জানায়, অনেক পশু অনাহারে মরতে বসেছে। একটি ছবিতে দেখা যাচ্ছে, এক ব্যক্তি খুবই দুর্বল এক বানরকে হাত দিয়ে টমেটোর টুকরা খাওয়ানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু বানরটি নিস্তেজ হয়ে পড়ছে।
গাজা শহর থেকে পালিয়ে আসা আদেল গোমা বলেন, ‘অনেক পরিবার আছে যারা পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। এখন আমাদের সমস্ত পরিবার এই চিড়িয়াখানায় অবস্থান করছে।
ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান আকাশ থেকে আমাদের দিকে যা ছুড়ে মারে তার চেয়ে এই প্রাণীদের মধ্যে বসবাস করা অনেক বেশি শান্তির।
চিড়িয়াখানার মালিক আহমেদ গোমা বলেছেন, ‘চারটি বানর ইতিমধ্যে মারা গেছে এবং পঞ্চমটি এখন এতটাই দুর্বল যে খাবার পেলেও খেতে পারছে না। দুটি সিংহশাবকের জন্যও তিনি ভয়ে আছেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা তাদের বাঁচিয়ে রাখার জন্য পানিতে ভিজিয়ে শুকনা রুটি খাওয়াই। পরিস্থিতি সত্যিই দুঃখজনক।’ তিনি জানান, সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে মা সিংহ তার অর্ধেক ওজন হারিয়ে ফেলেছে। আগে প্রতিদিন মুরগির মাংস দেওয়া হতো আর এখন সপ্তাহ ধরে অনাহারে থাকার পর শুধু শুকনা রুটি মেলে।
চিড়িয়াখানায় কাজ করেন এমন একজন পশু চিকিৎসক সোফিয়ান আবদিন বলেছেন, ‘অনাহার, দুর্বলতা, রক্তাল্পতার কারণে প্রাণীরা প্রতিদিন মারা যাচ্ছে এবং অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এই সমস্যাগুলো ব্যাপক আকার ধারণ করছে। কারণ কোনো খাবার নেই।’