গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে মামলা
কুমিল্লা প্রতিনিধি:
এক গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার ৩ দিন পর স্বামী-সাজ্জাদুর রহমান শাওন (৩০), শ্বশুর মো. শুভ মিয়া (৫৫), শাশুড়ি ইয়াসমিন বেগমসহ (৫০) ৭ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেছেন ভিক্টিমের মা রানুয়ারা বেগম (৪২)। সোমবার কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ১ নং ট্রাইবুনাল আদালতে ওই মামলা দায়ের করেন।
নিহত শান্তা আক্তার (২৩) দেবিদ্বার উপজেলার ৪ নং সুবিল ইউনিয়নের নারায়নপুর গ্রামের রুক্কু মিয়া ও রানুয়ারা বেগমের কন্যা।
তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত-বিক্ষত রয়েছে, বাম কানের একাংশ ছেড়া, মাথা থেতলানো ও রক্তাক্তসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত ও রক্তাক্ত ছিল।
শান্তার পারিবারিক সূত্রে জানায়, ২০১৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কুমিল্লার কাপ্তান বাজার এলাকার শুভ মিয়ার পুত্র মো. সাজ্জাদুর রহমান শাওনের সাথে ৫ লক্ষ টাকা দেনমোহরানায় শান্তার বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েক দিন না যেতেই স্বামী সাজাদ্দুর রহমান শান্তাকে যৌতুকের টাকার জন্য মারধর করতো। এ নিয়ে আদালতে একাধিক মামলাও হয়েছে। ৩টি মামলার মধ্যে দুটি নিষ্পত্তি হলেও বর্তমানে নারী ও শিশু দমন আইনে একটি মামলা চলমান রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার (১২জানুয়ারি) শান্তার স্বামী সাজাদ্দুর তার চাচার মৃত্যুর খবর দিয়ে শান্তাকে বাবার বাড়ি থেকে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। পরদিন শুক্রবার শান্তার বাবার বাড়িতে খবর পাঠায় যে, শান্তা বিষ পান করেছে।
স্থানীয় ইসলাম মিয়া মেম্বার বলেন শান্তার স্বামী সাজাদ্দুর রহমান মাদকাসক্ত। সে যৌতুকসহ বিভিন্ন দাবিতে শান্তাকে মারধর ও নির্যাতন করতো। এ নিয়ে আমরা একাধিক শালিস করেছি।
মামলার বাদী নিহত শান্তার মা রানুয়ারা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। তার মুখে বিষ ঢেলে খবর দেয় আমার মেয়ে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত-বিক্ষত রয়েছে, বাম কানের একাংশ ছেড়া, মাথা থেতলানো ও রক্তাক্তসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ক্ষত ও রক্তাক্ত ছিল। শান্তার স্বামী সাজাদ্দুর রহমান ব্যবসার নামে ৩ লক্ষ টাকা ধার নেয়, তার পরও আরো টাকা যৌতুক এনে দিতে আমার মেয়েকে প্রায়ই চাপাচাপি করত। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে স্বামীসহ পরিবারের সবাই মিলে মারধর করত। তিনি আরও জানান হত্যার বিষয়ে কোতোয়ালি থানায় মামলা করতে গেলে মামলা নেয়নি থানার ওসি। পরে বাধ্য হয়ে আদালতে মামলা করি।
এ বিষয় কুমিল্লার কোতোয়ালি থানার অফিসার ইনচার্জ আহমেদ সনজুর মোরশেদ জানান, লাশ ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।