চট্টগ্রামে পাহাড় কাটার প্রতিবাদে বৃক্ষ রোপন ও মানববন্ধন
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল সংলগ্ন গোয়াচি বাগান এলাকায় পাহাড় কেটে বার্ন ইউনিট নির্মাণের প্রতিবাদে বৃক্ষ রোপন এবং মানববন্ধন করেছে পরিবেশবাদী সংগঠন ‘সম্মিলিত পরিবেশ রক্ষা আন্দোলন’।
বুধবার সকাল ১১টায় কাটা পাহাড়ে গাছ রোপন করে ও মানববন্ধন করা হয়। এর আগে গত মঙ্গলবার বিক্ষুব্ধ পরিবেশকর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পাহাড়কাটা বন্ধ করেন।
চট্টগ্রাম উত্তর বনবিভাগ দেশজ গাছের চারা দিয়ে এবং নিজেরা উপস্থিত থেকে প্রায় আড়াই শতাধিক গাছ লাগানো হয়। এর মধ্যে আছে- গর্জন, তেলসুর, কদম, আর্জুন, রাজকড়ই, হরিতকী, আমলকী, তেঁতুল, কাঁঠাল, শাল, লেবু, জাম্বুরা, জাম সহ প্রায় ষোল প্রজাতির গাছ। সম্মিলিত পরিবেশ রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে অসংখ্য মানুষ এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে। রোপন করা গাছগুলোকে পানি দিয়ে এই শুষ্ক মৌসুমে বাঁচানোর জন্য প্রকল্প পরিচালককে অনুরোধ করা হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান, উদ্ভিদ বিজ্ঞানী প্রফেসর ড. এমএ গফুর, পরিবেশকর্মী ডা. মনজুরুল করিম বিপ্লব, ঋতু পারভীন, রাশেদ সুফিয়ান, মো. শফিকুল ইসলাম খান, মাহমুদ মুরাদ, এআরটি রাহী, মো. রহিম, আনোয়ার জাহান রোজি, রাজনীতিক এম এ হাশেম রাজু প্রমুখ।
প্রতিবাদ সভায় বক্তারা বলেন, আমরা উন্নয়নের বিপক্ষে নই। চট্টগ্রামে বার্ন ইউনিট অত্যন্ত প্রয়োজন। কিন্তু সেটি পাহাড় কেটে, পরিবেশ ধ্বংস করে নয়। কয়েকজনকে বাঁচানোর নামে লক্ষ কোটি মানুষকে মৃত্যুঝুঁকিতে ফেলার অধিকার কারও নেই। কয়েকজন মানুষকে অক্সিজেন দিতে গিয়ে লক্ষ কোটি মানুষের প্রাকৃতিক অক্সিজেন ধ্বংস করার অধিকার আপনাদের নেই।
পরিবেশকর্মীরা বলেন, একাধিকবার বৈঠক করে পাহাড় না কাটার অঙ্গীকার করেও রাতের আঁধারে পাহাড় কেটে সাবাড় করার নির্দেশদাতা প্রতিটি পাহাড়কখেকো, বার্ন ইউনিট-সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের কর্মকর্তা, প্রকৌশলীসহ যারা এই পাহাড় কাটার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষাভাবে জড়িত, তাদেরকে অতিদ্রুত আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি। একই সঙ্গে বলতে চাই, এই পাহাড়ে যদি আর একটিও কোপ পড়ে, তাহলে এখানে পরিবেশকর্মী শুধু নয়, চট্টগ্রামের সাধারণ মানুষ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলবে। যারা পাহাড় কাটবে না বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েও তা ভঙ্গ করেছে তাদেরও শেষবারের মতো হুঁশিয়ারি দেয়া যাচ্ছে- ছাড় দেয়া হবে না। প্রকৃতি-পরিবেশ ধ্বংস করে কোনো উন্নয়ন কাজ আমরা চাই না।