নওগাঁয় ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ করে চলে রবিউলের সংসার

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

প্রাচীনকাল ধরে মালপত্র বহন ও মানুষের বাহনে ঘোড়া ব্যবহৃত হলেও কালের পরিক্রমায় তা বিলুপ্তির পথে। কিন্তু ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ বিরল ঘটনা।

যান্ত্রিক ট্রাক্টরের যুগে গরুর হাল ঠিকমতো চোখে পড়ে না। আর সেখানে ধানের জমিতে গরুর বদলে ঘোড়া দিয়ে চাষ করছেন রবিউল ইসলাম নামে এক কৃষক। তিনি নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার চন্দননগর ইউনিয়নের করমজাই গ্রামের বাসিন্দা।

গতকাল শনিবার উপজেলার চন্দননগর ইউনিয়নের বেনীপুর গ্রামের পাশে কৃষি জমিতে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষ করতে দেখা যায় রবিউল ইসলামকে। জীবিকার তাগিদে ঘোড়া দিয়ে হাল চাষের লক্ষ্য নিয়েই গত ৫ বছর আগে ১৪ হাজার টাকা দিয়ে ঘোড়া কিনেছিলেন তিনি। প্রতি বিঘা জমিতে ঘোড়া দিয়ে মই দিতে খরচ নেন ২০০ টাকা। দিনে প্রায় ৫ বিঘা জমিতে ঘোড়া দিয়ে মই দিতে পারেন। এভাবে দিনে এক হাজার টাকা রোজগার করেন ঘোড়া থেকে।

আমন আর ইরি-বোরো মৌসুম মিলে ৬০ হাজার টাকা রোজগার করেন ঘোড়া থেকে। পাশাপাশি বিভিন্ন সময় অনন্য শাক-সবজির বীজতলা তৈরিতেও কাজে লাগান ঘোড়া। এই ঘোড়া দিয়েই চলে রবিউলের ৫ সদস্যের সংসার।

রবিউল বলেন, ঘোড়া দিয়ে কৃষি জমিতে মই দিলে জমি উঁচু নিচু থাকে না। এতে করে ফসলও ভালো হয়। এজন্য ঘোড়া দিয়ে মই দেওয়ার প্রতি বেশি আগ্রহ কৃষকদের। আজ থেকে ৫ বছর আগে আমি ঘোড়াটি কিনেছিলাম কৃষি কাজে সাহায্য পাবো সেই আশায়। আজ এই ঘোড়াই আমার জীবিকা অনেকাংশেই সহজ করে দিয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, কৃষকেরা এখন যান্ত্রিক উপায়ে জমি চাষ করেন। ঘোড়া দিয়ে কেউ জমিচাষ করে না। কৃষক রবিউল ইসলাম নিজের প্রয়োজনে বাড়তি আয়ের জন্য ঘোড়া দিয়ে জমি চাষ বা মই দেন এটা তার নিজস্ব ব্যাপার। তবে কৃষি বিভাগ সবসময় আধুনিক মানের যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে চাষাবাদ করার জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights