নতুন বিশ্ব-ব্যবস্থায় বিদেশি হস্তক্ষেপ আর গ্রহণযোগ্য হবে না : আসাদ
অনলাইন ডেস্ক
১২ বছরেরও বেশি সময় পর আরব লীগের শীর্ষ সম্মেলনে তার প্রথম ভাষণে বিদেশি হস্তক্ষেপ ছাড়াই মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা সমাধানের একটি ঐতিহাসিক সুযোগ তৈরি হওয়ার কথা বলেছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ।
২০১১ সালের পর প্রথমবারের মতো আসাদ তার আরব প্রতিবেশীদের সাথে এক কাতারে বসেন।
তার বিরোধীদের, বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি একটি স্পষ্ট বার্তা জানাতে আসাদ তার সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় বলেন, একটি নতুন বিশ্ব-ব্যবস্থা চালু হচ্ছে যেখানে বিদেশি হস্তক্ষেপ আর গ্রহণযোগ্য হবে না।
সিরিয়ার নেতা এর আগে এই শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক দেশ সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে আলিঙ্গন করেন।
যুবরাজ মোহাম্মদ আশা প্রকাশ করেন যে এই শীর্ষ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট আসাদের উপস্থিতি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে।
বিচ্ছিন্নতার অবসান
১২ বছরেরও বেশি সময় পর এই আঞ্চলিক সম্মেলনে এটাই আসাদের প্রথম উপস্থিতি। গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের নৃশংস দমন এবং দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধ, যেখানে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে মনে করা হয়, তার প্রতিক্রিয়া হিসেবে সিরিয়াকে আরব লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল ।
আরব বিশ্বের এই মঞ্চে বাশার আল আসাদের প্রত্যাবর্তন সম্ভব হয়েছে এই শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক দেশ সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের হস্তক্ষেপে। কিন্তু অন্য দেশগুলো এ ব্যাপারে হতাশা প্রকাশ করেছে।
গত ফেব্রুয়ারিতে তুরস্ক এবং উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় আঘাত হানা বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পর আরব প্রতিবেশীদের সাথে সিরিয়ার সম্পর্ক ত্বরান্বিত হয়।
সে সময় একসময়ের শত্রুভাবাপন্ন দেশগুলো সিরিয়ার সরকার-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় মানবিক সাহায্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।
ওদিকে, চীন গত মার্চ মাসে এক শান্তিচুক্তিতে মধ্যস্থতা করে যাতে সৌদি আরব তার দীর্ঘদিনের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনস্থাপন করে।
অন্যদিকে ইরান রাশিয়ার সাথে মিলে আসাদের বাহিনীকে সিরিয়ার বৃহত্তম শহরগুলির নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করে।
তবে সিরিয়ার একটি বড় অংশ এখনও তুর্কি-সমর্থিত বিদ্রোহী, জিহাদি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দি-নেতৃত্বাধীন মিলিশিয়া যোদ্ধাদের দখলে রয়েছে।
গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে সিরিয়ার জনসংখ্যা ছিল দুই কোটি ২২ লক্ষ। সংঘাত শুরু হওয়ার পর এর অর্ধেক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়।
প্রায় ৬৮ লক্ষ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, এবং আরও ৬০ লক্ষ মানুষ শরণার্থী বা বিদেশে আশ্রয়প্রার্থী হয়েছেন।
সূত্র : বিবিসি।