নানা আয়োজনে মেক্সিকো সিটিতে বিজয় দিবস উদযাপন
মেক্সিকো প্রতিনিধি:
বাংলাদেশের ৫৩তম বিজয় দিবসে মেক্সিকো সিটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, কূটনৈতিক এবং বাংলাদেশি কমিউনিটির সদস্যসহ প্রায় ৮০ জন অতিথি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
দিনটি শুরু হয় জাতীয় পতাকা উত্তোলন এবং জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে, যা পরিচালনা করেন রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের রাষ্ট্রপতি, প্রধান উপদেষ্টা এবং পররাষ্ট্র উপদেষ্টার বাণী পাঠ করা হয়। বাণীগুলোতে বাংলাদেশের অগ্রগতি ও ভবিষ্যৎ প্রত্যাশার কথা তুলে ধরা হয়। এছাড়া, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের এবং ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসের ঐতিহাসিক জাতীয় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে প্রাণ উৎসর্গকারী যুবকদের স্মরণে বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।
বিকেলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে মেক্সিকো সিটিতে অবস্থিত বিভিন্ন কূটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধি, যার মধ্যে ২০ জন রাষ্ট্রদূত উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি আইভরি কোস্টের রাষ্ট্রদূত এবং ডিন অব ডিপ্লোম্যাটিক কোর, রবার্ট লি জেরু বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও উন্নয়নের গৌরবোজ্জ্বল অগ্রযাত্রার প্রশংসা করেন। বিশেষ অতিথি এশিয়া-প্যাসিফিক কমিশনের সভাপতি ও সিনেটর ইয়েদকল পোলেভেনস্কি বাংলাদেশের দৃঢ়তা এবং মেক্সিকোর সাথে ক্রমবর্ধমান সাংস্কৃতিক বন্ধন তুলে ধরে দুই দেশের মধ্যে বহুমুখী সহযোগিতার আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম ১৯৭১ সালের শহীদদের আত্মত্যাগ এবং ২০২৪ সালের যুব নেতৃত্বাধীন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি শোষণ ও স্বৈরাচারমুক্ত সমৃদ্ধ এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গঠনে বাংলাদেশের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। এছাড়াও, তিনি বাংলাদেশের জলবায়ু সহনশীলতা এবং টেকসই উন্নয়নে অর্জনগুলোর কথা তুলে ধরেন এবং ই-পাসপোর্ট সেবার সফল উদ্বোধনসহ দূতাবাসের সাম্প্রতিক মাইলফলকগুলো তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের সাংস্কৃতিক পর্বে দেশাত্মবোধক গান ও ঐতিহ্যবাহী নৃত্য পরিবেশন করেন কার্লা মার্গারিটা ওচোয়া সোলিস, আনা সোফিয়া ওচোয়া সোলিস এবং এরনেস্তো ডে লা তেজা। অতিথিদের জন্য পরিবেশন করা হয় বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার, যা তাদের জন্য একটি অনন্য ও আনন্দদায়ক অভিজ্ঞতা তৈরি করে। এই উদযাপন বাংলাদেশের সংগ্রাম থেকে অগ্রগতির পথে যাত্রার সাক্ষ্য বহন করে। এটি বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়ন, বিশ্ব অংশীদারিত্ব এবং নিজস্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণের প্রতি অঙ্গীকারের প্রতিফলন ঘটায়।