নেত্রকোনায় ফিরেছে স্বস্তি, আতঙ্কে অপরাধীরা
নেত্রকোনায় দেড় দশক ধরে দখলকৃত জমি উদ্ধারসহ চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, মাদক আগের চেয়ে দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনায় স্বস্তি ফিরেছে ব্যবসায়ীসহ সর্বমহলে। সেনাবাহিনীর তাৎক্ষণিক হস্তক্ষেপে হামলা, লুটপাটসহ সহিংস ঘটনাগুলোর বিচার পাওয়ায় খুশি ভুক্তভোগীরা। তবে এখন আতঙ্কে আছে অপরাধীরা। প্রতিদিন নানা অভিযোগ নিয়ে সাতপাই স্টেডিয়ামে অস্থায়ী ক্যাম্প গেইটে ভিড় করছেন বিচার প্রত্যাশী অসহায়রা।
আরামবাগের ব্যবসায়ী দিলীপ সরকার ও কাজল সরকারসহ অনেকে জানান, আমাদের গুড়ের গাড়িসহ অন্যান্য মালামাল লুট হয়ে গিয়েছিলো। সেনাবাহিনী খবর পেয়েই সেটি উদ্ধার করে দিয়েছে। যে কারণে এখন আর ব্যবসায়ীদের মাঝে কোন ভয় নেই।
জনউদ্যোগের আহ্বায়ক হায়দার জাহান চৌধুরী জানান, জনমনে কিছুটা আস্থা তৈরী হওয়ায় সর্ব সাধারণ প্রত্যাশা করছে এমন তৎপরতা যেন ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকে।
জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের পরে গাঁ ঢাকা দেয় পতিত সরকারের চাঁদাবাজ আপরাধী ও তাদের পৃষ্টপোষকতাকারী আওয়ামী লীগের হেভিওয়েটসহ সকল পর্যায়ের নেতারা। কিন্তু সীমান্তবর্তী জেলাটিকে মাদক, চোরাচালানসহ নানা ধরনের অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করে রাখায় হাত বদলে চলে সকল কার্যক্রম। এর উপর একেবারে নিস্ক্রিয় হয়ে পড়ে থানা পুলিশ। সে সুযোগে হামলা, অগ্নি সংযোগ, লুটপাটসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ে বিক্ষুব্ধ জনতা। জনতার বিক্ষুব্ধতাকে পুঁজি করে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে রঙ বদলকারী কতিপয় চাঁদাবাজ গোষ্ঠী। উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামলাতে সক্ষমতা হয় ৮ ইষ্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সদস্যরা। অপরাধ দমনে সেনাবাহিনী পুলিশের ছিনতাই হওয়া অস্ত্র উদ্ধারসহ লুটপাট, হামলা, চাঁদাবাজি, মাদক সন্ত্রাসীদের একের পর এক আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। বিশেষ করে লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি সর্বমহলে প্রশংশিত হচ্ছে।
ক্যাম্পের উপ অধিনায়ক মেজর জিসানুল হায়দার জানান, গত ২০ জুলাই থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত মাদক, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে ১০৬৯ টি। মামলা হয়েছে ১৫২ টি (ট্রাফিক মামলায় ১২৬টি)। গ্রেফতার হয়েছে ৭৮ জন। পিস্তল, ম্যাগজিন উদ্ধারসহ ১৩৪৩ পিস ইয়াবা, ২৮ কেজি ৯২০ গ্রাম গাঁজা, ২৯৩ বোতল মদ, ৪৩ বোতল ফেনসিডিল ও ১১৮৫ পিস টেপেন্ডাডল ট্যাবলেট জব্দ করা হয়।
ক্যাম্পের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল নূর-ই আহমেদ আল-শাফী জানান, গত ২০ জুলাইয়ের পর থেকে মারাত্মকভাবে অবনতি হওয়া আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থানীয় জনগণকে সাথে নিয়ে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে অনেকটা সক্ষম হয়েছি। কুইক রেন্সপন্স টিম ৫ মিনিটেই চলে যাচ্ছে। চোরচালানসহ সন্ত্রাসী মাদক নিয়ন্ত্রণে জনসাধারণ সহায়তা করছে তথ্য দিয়ে। আমাদের সাথে থেকে সহযোগিতা করলে এবং বিশ্বাস রাখলে আমরা সফলতার সাথে পরিবেশ সুন্দর রাখতে পারবো।