‘পথের পাঁচালী’র দিদি দুর্গাকে নিয়ে যা বললেন ভাই অপু

‘পথের পাঁচালী’তে একই সাথে অভিনয় করেছেন সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায় আর উমা দাশগুপ্ত। ‍সুবীর ছিলেন অপু আর তার বড় দিদি ছিলেন উমা (পর্দার দুর্গা)। এবার পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন দুর্গাখ্যাত উমা। জীবনে একটি ছবিতে অভিনয় করেই যিনি পরিচিতি পেয়েছিলেন বিশ্ব দরবারে। দিদি দুর্গার মৃত্যুতে স্মৃতিচারণ করেছেন সুবীর।

সুবীর বলেছেন, ‘সকালেই খবরটা পেয়েছি। দিদি আর নেই। জানতাম, দিদি দীর্ঘ দিন ধরে অসুস্থ রয়েছেন। কিন্তু, তার পর এ রকম একটা খবর! মনটা খারাপ হয়ে রয়েছে।’

সুবীরের ভাষায়, ‘আজকে বেশি করে ‘পথের পাঁচালী’র শুটিংয়ের দিনগুলো মনে পড়ছে। আমার তখন মাত্র ৯ বছর বয়স। আর উমাদির ১৪ বছর। আমি তো শুটিংয়ের কিছুই বুঝতাম না। একসঙ্গে দু’জনে শুটিং করছি। গড়িয়ার বোড়ালে শুটিং। ট্রেন দেখতে যাওয়ার দৃশ্যের শুটিং হয়েছিল শক্তিগড়ের কাছে পালসিটে। আমাকে শুরু থেকে আগলে রাখতেন দিদি। একসঙ্গে খাওয়াদাওয়া, খুনসুটি করতাম। আনন্দ করতাম। একেবারেই যেন ভাই-বোন। ছবির মতোই শুটিং ফ্লোরেও তিনি যেন আক্ষরিক অর্থেই আমার দিদির মতো হয়ে উঠেছিলেন।’
সুবীর বলেছেন, ‘তার পর আমাদেরও বয়স বেড়েছে। বিভিন্ন সময়ে একাধিক অনুষ্ঠানে একসঙ্গে গিয়েছি। মানুষ যে আমাদের এখনও মনে রেখেছেন, সেটা খুব ভাল লাগে। দিদির সঙ্গে শেষের দিকে আমার খুব বেশি দেখা হয়নি। সত্যজিৎ রায়ের জন্মশতবর্ষে ‘পথের পাঁচালী’র সঙ্গে যুক্ত সকলকে নন্দনে সংবর্ধনা দেওয়া হল। ভেবেছিলাম, দিদির সঙ্গে দেখা হবে। কিন্তু দেখলাম, তিনি আসতে পারলেন না। জানতে পারলাম, শরীর খুবই খারাপ। আর্থ্রাইটিসে ভুগছেন। তার পর আর সেই ভাবে দেখা হয়নি।’

শেষে সুবীর বলেছেন, ‘স্মৃতি অনেক সময়েই দুঃখের এবং বেদনার হতে পারে। এ বারে সেটাই হল। একে একে ‘পথের পাঁচালী’র সকলেই চলে যাচ্ছেন। একদিন আমিও চলে যাব। দিদির প্রতি আমার শ্রদ্ধা। আরও কিছু দিন তিনি থাকলে ভাল হত। হয়তো আরও এক বার আমাদের দেখা হত। সেই সুযোগটা আর পেলাম না।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights