পিকে হালদারের বিরুদ্ধে মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ পেছাল

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

বাংলাদেশ থেকে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে পি.কে হালদার ওরফে প্রশান্ত কুমার হালদারের বিরুদ্ধে করা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ পেছাল।

আজ শনিবার কলকাতার নগর দায়রা আদালতে (ব্যাংকশাল) পি.কে হালদারসহ ছয় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ‌‘অর্থ পাচার সংক্রান্ত আইন-২০০২’ করা এ মামলায় সাক্ষ্য গ্রহণের কথা থাকলেও তা পিছিয়ে যায়। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেছে আদালত। জানা গেছে, এদিন আদালতে সাক্ষী অনুপস্থিত থাকার কারণেই সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করা যায়নি।

ইতোমধ্যেই এই মামলায় নতুন করে প্রাণেশ কুমার হালদারের জামিন চেয়ে আবেদন করা হয়েছে এবং সেই বিষয়টি নিয়ে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি আদালতে শুনানি হবে। পাশাপাশি আরেক অভিযুক্ত আমানা সুলতানের শারীরিক অবস্থার মেডিকেল রিপোর্ট চেয়ে আদালতে আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া পিকে হালদারের মা লীলাবতী হালদারের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাকে কলকাতার বৈদিক ভিলেজে তার নিজের বাড়িতে পাঠানোর জন্যও আদালতে একটি আবেদন করা হয়েছে। ওই দিনই এসব বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে আদালত।
এদিন অভিযুক্তের আইনজীবি বিশ্বজিৎ মান্না বলেন, ‘অভিযুক্ত নারী আমানা সুলতানার শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকার জন্য কারাগার কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে একটা মেডিকেল রিপোর্ট চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রানেশ হালদারের জন্য জামিনের আবেদন করা হয়েছে।’

তিনি আরো জানান, আজ শনিবার সাক্ষ্যগ্রহণের মাধ্যমে ছয় অভিযুক্তের বিচার শুরু হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু আজ সাক্ষীরা আসেননি। তাছাড়া
রেগুলার কোর্ট ছিল না, চার্জের কোর্ট ছিল। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি রেগুলার কোর্টেই সাক্ষ্য দেওয়ার বিষয়ে আদালত সিদ্ধান্ত নেবে।

অন্যদিকে ইডির আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী জানান, প্রাণেশ কুমার হালদারের যে জামিনের আবেদন করা হয়েছে, ইডির তরফে তার বিরোধিতা করা হয়েছে। পাশাপাশি সম্পত্তি পুনরুদ্ধারের যে মামলা করা হয়েছে সেটিতেও ইডি আপত্তি জানায়। আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি এই ইস্যুগুলোতে শুনানি হবে এবং তার পরেই সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।’ তার অভিমত, ‘আদালতে বকেয়া পিটিশনগুলো নিয়ে সিদ্ধান্ত না নেওয়া পর্যন্ত সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করা সম্ভব নয়।’

উল্লেখ্য, টানা কয়েক দফায় বিচারবিভাগীয় হেফাজতে থাকার পর শনিবার অভিযুক্ত পিকে হালদার, তার ভাই প্রাণেশ হালদার, স্বপন মিস্ত্রি ওরফে স্বপন মৈত্র, উত্তম মিস্ত্রি ওরফে উত্তম মৈত্র, ইমাম হোসেন ওরফে ইমন হালদার এবং আমানা সুলতানা ওরফে শর্মী হালদারসহ ছয় অভিযুক্তকেই আদালতে হাজির করা হয়। বহু আলোচিত এই মামলার শুনানি ছিল আদালতের স্পেশাল সিবিআই কোর্ট-৩ বিচারক শুভেন্দু সাহার এজলাসে।

২০২২ সালের ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গের রাজারহাটের বৈদিক ভিলেজ, বোর্ড হাউস ১৫, গ্রিনটেক সিটি থেকে পিকে হালদারকে গ্রেফতার করে ভারতের তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। এছাড়া রাজ্যটির বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে পিকে হালদারের আরও ৫ সহযোগীকেও গ্রেফতার করা হয়। ইতোমধ্যেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জ গঠন করা হয়েছে। বর্তমানে পিকে হালদারসহ ৫ পুরুষ অভিযুক্ত রয়েছেন কলকাতার প্রেসিডেন্সি কারাগারে। অন্যদিকে একমাত্র নারী অভিযুক্ত রয়েছেন আলিপুর নারী সংশোধনাগারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights