বছরে পাচার ৭-৮ বিলিয়ন ডলার

নিজস্ব প্রতিবেদক

সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. এম শামসুল আলম বলেছেন, টাকা পাচার থেকেই ডলার সংকটের শুরু বলে মনে করেন অনেকে। বছরে ৭ থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়। এ কারণে ডলার সংকট দেখা যায়। এটা রোধ করার পদক্ষেপ নেওয়া দরকার।

গতকাল রাজধানীর বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে ‘বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অর্থনীতি : প্রবৃদ্ধি, মুদ্রাস্ফীতি, খাদ্য ও পুষ্টি’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এমন তথ্য জানান। অর্থমন্ত্রীকে কর আদায়ে জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, এনবিআরকে শুধু কর আদায়ে ব্যবহার করুন। তবে ঋণখেলাপি কীভাবে কমানো যায় তা চিন্তা করতে হবে। ব্যাংক একীভূত করার যে উদ্যোগ তার ফলাফল অনিশ্চিত।

ড. এম শামসুল আলম বলেন, পাইপলাইনে অনেক ঋণ আছে। ঋণের ২২ শতাংশ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ব্যাংকের খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এর রাশ টানতেই হবে। তিনি আরও বলেন, ব্যাংক কমিশন করলে ভালো, না হলে অন্তত শক্তিশালী একটা কমিটি করা উচিত বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদদের নিয়ে। কর ন্যায়পাল নিয়োগ, এনবিআর ও আইআরডির কাজ আলাদা করা। এডিপি বাস্তবায়নে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। মূল্যস্ফীতি কমাতে আমদানি নীতি সহজ করা জরুরি। বাজারে সরবরাহ ঠিক রাখলে চাহিদা-জোগান ঠিক থাকে।
সাবেক পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, সংসদ সদস্যদের গাাড়ি আমদানিতে করমুক্ত সুবিধা প্রত্যাহারের মতো প্রস্তাব সাহসী। ভোগ্যপণ্যের সরবরাহ পর্যায়ে উৎসে কর ১ শতাংশ কমানো মূল্যস্ফীতি কমাতে ভূমিকা রাখবে। সামষ্টিক অর্থনীতির ইতিবাচক দিক, ব্যাংকে সঞ্চয় বেড়েছে, রাজস্ব প্রবৃদ্ধি ১৫ দশমিক ৫ শতাংশ, বোরো ধান বাম্পার, শাকসবজি, প্রবাসী আয় ভালো, কিছু পণ্যের দাম কমছে। তিনি আরও বলেন, বাজেটের পর দাম বাড়েনি। মে পর্যন্ত ১১ মাসে প্রবাসী আয় ২ বিলিয়ন বেড়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হার স্থিতিশীল হচ্ছে। অফশোর ব্যাংকের মাধ্যমে ৮ দশমিক ৫ শতাংশ সুদে বিদেশি মুদ্রার আমানত আসবে বলে আশা করা যায়। এবারের বাজেটে সরকার বেশ কিছু সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে। মূল্যস্ফীতি কমানোর উদ্দেশে সরকার এবার বাজেট কমিয়েছে। ঘাটতিও কমানো হয়েছে, যা খরচ কমানোর স্বার্থে করা হয়েছে বলে মনে হয়। ড. আলম বলেন, এটি একটি সাহসী বাজেট। এই বাজেটে মূল্যস্ফীতি কমবে। কারণ, নয়-ছয় সুদের হার উঠিয়ে নেওয়ায় এতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। করপোরেট করহার কমানো হয়েছে। উৎপাদন বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কৃষিতে উন্নত প্রযুক্তি বা যন্ত্রপাতি আমদানির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সামষ্টিক অর্থনীতিতে বাজেটের ইতিবাচক দিক হলো রাজস্ব বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights