বরিশালে নিখোঁজ মাঝির লাশ উদ্ধার, ভাতিজাসহ আটক ৬
নিজস্ব প্রতিবেদক, বরিশাল
বরিশালে গত ৩১ ডিসেম্বর রাতে খেয়া পারাপারের ট্রলারসহ নিখোঁজ মাঝির লাশ উদ্ধার হয়েছে। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার কেদারপুর ইউনিয়নের মোল্লার হাট এলাকা থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার মো. শরীফ উদ্দীন।
ওই ট্রলার মাঝি হলেন মাহবুব হাওলাদার (৫২)। তিনি উজিরপুর উপজেলার শিকারপুর ইউনিয়নের পশ্চিম মুন্ডপাশা গ্রামের সেকান্দার হাওলাদারের ছেলে।
পুলিশ সুপার মো. শরীফ উদ্দীন বলেন, ৩১ জানুয়ারি রাতে নিখোঁজ হওয়া খেয়া পারাপারের ট্রলার মাঝি মাহবুব হাওলাদারকে অপহরণ করা হয়। এরপর থেকে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মাহবুবের আপন ভাইয়ের ছেলেসহ ছয়জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তিন নদীর মোহনা থেকে মাহবুবের লাশ উদ্ধার করা হয়।
বাবুগঞ্জ থানার ওসি শেখ আমিনুল ইসলাম বলেন, নিহত মাহবুব হাওলাদার সন্ধ্যা নদীর বাবুগঞ্জ উপজেলার রাহুতকাঠি এবং উজিরপুর উপজেলার শিকারবন্দর রুটে ট্রলারে যাত্রী পারাপার করতেন। ৩১ জানুয়ারি রাত ১০টার দিকে অজ্ঞাত ৮-১০ জন তরুণকে নিয়ে তিনি বাবুগঞ্জের রাহুতকাঠি থেকে উজিরপুরের শিকারপুর বন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তবে নদীর মাঝপথে পৌঁছালে জেলেসহ দুই তীরের মানুষ চিৎকার শুনতে পায়। এরপর থেকেই ট্রলারসহ মাহবুবের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।
এ ঘটনায় তার ছেলে মারুফ হাওলাদার অজ্ঞাতদের আসামি করে বাবুগঞ্জ থানায় মামলা করেন। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে বাবুগঞ্জ ও উজিরপুর মডেল থানা পুলিশ যৌথ অভিযান চালায়। ধারাবাহিক অভিযানে ঘটনায় জড়িত সন্দেহে মাহবুবের আপন ভাই শহীদ হাওলাদারের ছেলে সুজন হাওলাদার ও রিয়াদসহ ছয়জনকে আটক করা হয়। সুজন ও রিয়াদ স্বীকার করেন যে তারা মাহবুবকে অপহরণ ও হত্যা করে লাশে ব্লক বেঁধে তিন নদীর মোহনায় ফেলে দেয়। পরে তাদের নিয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা তিন নদীর মোহনায় তল্লাশি চালিয়ে লাশ উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, পারিবারিক বিরোধ ও খেয়াঘাটের ইজারা দখল করার উদ্দেশ্যে ভাতিজা সুজন এ হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন।
নিহতের ভাই জামাল হোসেন বলেন, “৪০ বছর ধরে আমার ভাই ট্রলারে দুই উপজেলার মানুষ পারাপার করতেন। তাকে খুঁজে না পাওয়ায় ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে খেয়াঘাট দিয়ে যাত্রী পারাপার বন্ধ রয়েছে। এছাড়া ভাইকে খুঁজে পেতে বরিশাল-ঢাকা মহাসড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন করেছেন দুই হাজারের বেশি মানুষ।”