বসুন্ধরা গ্রুপ বড় উপকার করল

অনলাইন ডেস্ক
তারাগুনিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস রাখি। কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার তারাগুনিয়া কৈপাল গ্রামে দাদা-দাদি ও বড় ভাইয়ের সঙ্গে সে বসবাস করে। জন্মের কিছুদিন পর তার বাবা মারা যান। বাবার মৃত্যুর পর মা বিয়ে করে অন্যত্র চলে যান।

এর পর থেকে রাখি ও তার বড় ভাই দাদা-দাদির কাছে রয়েছে। রাখির ভাই এক দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত। সে কোনো কাজ করতে পারে না। আগে দাদা দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন।

কিন্তু বার্ধক্যজনিত কারণে তিনি এখন নিয়মিত কাজ করতে পারেন না। তাই বেশির ভাগ দিন রাখির পরিবারকে অর্ধাহারে কাটাতে হয়। অর্থাভাবে রাখি এখন নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে পারে না। তবে সে স্বপ্ন দেখে পড়ালেখা করে ভবিষ্যতে পুলিশ হয়ে দেশ ও মানুষের সেবা করবে।
তাই পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার পাশাপাশি নিজের স্বপ্নপূরণের জন্য সে উপার্জনের পথ খোঁজ করতে শুরু করে। এর মধ্যে রাখি জানতে পারে বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় অসহায় ও অসচ্ছল নারীদের স্বাবলম্বী করার লক্ষ্যে বিনা মূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ ও সেলাই মেশিন দেওয়া হবে। বসুন্ধরা শুভসংঘ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে সে যোগ দেয়। সম্প্রতি তার হাতে সেলাই মেশিন তুলে দেওয়া হয়। এ সময় উচ্ছ্বসিত রাখি বলে, ‘আমার পরিবারের বর্তমান পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকার আশা দেখাচ্ছে বসুন্ধরা গ্রুপ।

তাদের দেওয়া সেলাই মেশিনে আমি সেলাইয়ের কাজ করে পরিবারের খরচ ও নিজের পড়ার খরচ নিজে চালাব। বসুন্ধরা শুভসংঘ আমার অনেক উপকার করল। আল্লাহ বসুন্ধরার সবার মঙ্গল করুক।’

আরেক সংগ্রামী নারী কোহেলী আক্তারের চার সন্তান। দুই ছেলে ও দুই মেয়ের মধ্যে বড় ছেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকে অধ্যয়নরত। আরেক ছেলে দশম শ্রেণিতে এবং মেয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ছে। আরেকজনের বয়স মাত্র পাঁচ বছর। কোহেলীর স্বামী স্ট্রোক করে দীর্ঘদিন ধরে শয্যাশায়ী। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি শয্যাশায়ী হয়ে পড়ায় সংসারে অভাব ভর করে। বড় ছেলে টিউশনি করে কোনো রকমে নিজের খরচ বহন করতে পারেন। কিন্তু পরিবারের খরচ বহন করা তাঁর পক্ষে সম্ভব হয়ে ওঠে না। কোহেলী আক্তার নিজের ভাইয়ের সামান্য সাহায্য-সহযোগিতার মাধ্যমে পরিবারের সদস্যদের খাবারের জোগান দিচ্ছেন। তবে তিনি চান নিজে উপার্জন করবেন। তাই বসুন্ধরা শুভসংঘ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বিনা মূল্যে সেলাই প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। প্রশিক্ষণ শেষে সংসারে সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে বসুন্ধরা গ্রুপের সহায়তায় তাঁকে সেলাই মেশিন দেওয়া হয়। সেলাই মেশিন পেয়ে কোহেলী আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এ সময় তিনি বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান ও তাঁর পরিবারের জন্য দোয়া করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

What do you like about this page?

0 / 400

Verified by MonsterInsights