বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রায় দেড় কোটি টাকার সোনা পাচারকালে আটক ২
বাংলাদেশ থেকে ভারতে পাচারের সময় প্রায় দেড় কোটি টাকার সোনাসহ দুজনকে আটক করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পেট্রাপোল স্থলবন্দরে সুসংহত চেকপোস্ট থেকে তাদের আটক করা হয়। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) ১৪৫ ব্যাটেলিয়নের সদস্যরা বিভিন্ন আকারের ১১টি সোনার বিস্কুটসহ দুই বাংলাদেশি পাচারকারীকে গ্ৰেফতার করেছেন বলে জানা গেছে।
পাচারকারীরা ঢাকা ও কলকাতার মধ্যে চলাচলকারী শ্যামলী এনআর ট্রাভেলসের একটি আন্তর্জাতিক বাসে করে পেট্রাপোল স্থলবন্দর হয়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে সোনার বিস্কুট পাচারের চেষ্টা করছিল।
আটক সোনার বিস্কুট গুলোর ওজন ২০৪৮ দশমিক ৩৮০ গ্ৰাম যার আনুমানিক বাজার মূল্য ১ কোটি ২৩ লাখ ৮২ হাজার ৪৫৭ রুপি বা ১ কোটি ৬৩ লাখ ৪৪ হাজার ৮৪৩ টাকা।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা ও কলকাতার মধ্যে চলাচলকারী একটি আন্তর্জাতিক বাস (শ্যামলি এন আর ট্রাভেলস) নিরাপত্তার ছাড়পত্রের জন্য উত্তর ২৪ পরগনা জেলার পেট্রাপোল স্থলবন্দরের বাস চেকিং পয়েন্টে এসে পৌঁছায়।
সে সময় বিএসএফের বম্ব ডিসপোজাল স্কোয়াড দল এবং স্নিফার ডগ স্কোয়াডের নিয়মিত অনুসন্ধানের সময় বাসের সিটের পাদানিতে লুকিয়ে রাখা টেপ দিয়ে মোড়ানো বিভিন্ন আকার এবং আয়তনের ১১টি সোনার বার উদ্ধার করে।
বাস চালক ও সুপারভাইজারকে সোনার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তারা কোনো উত্তর দিতে পারেনি। পরে বাসের চালক ও সুপারভাইজারকে আটক করে সোনার বার গুলো জব্দ করা হয়।
তবে ওই বাসের হেল্পার যাত্রীদের মধ্যে মিশে গেলে তাকে আর ধরা যায়নি। তাকে আটকের চেষ্টা চলছে। আটক হওয়া বাস চালক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন (৬১) বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জ জেলার বড়পার পূর্ব পাড়া গ্ৰামের রূপগঞ্জ থানার বাসিন্দা। বাসের সুপারভাইজার এমডি সামিম মাহমুদ (৫০) বাংলাদেশের ঢাকার কোন্ডা পশ্চিম কোটাপাড়া সাভার থানার বাসিন্দা।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা বাস চালক মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান, জীবিকা নির্বাহের জন্য বাসচালক হিসেবে কাজ করেন তিনি এবং গত ২০ বছর ধরে এই পেশায় রয়েছে। তবে জব্দ করা সোনার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন।
বাসের সুপারভাইজার এমডি সামিম মাহমুদ জানান, গত ১২ বছর ধরেই এই পেশায় আছেন। তবে উদ্ধারকৃত সোনার বিষয়ে তার কিছুই জানা নেই। তাদের সঙ্গে থাকা হেল্পার কামরুল হোসেন জব্দ হওয়া সোনার বিষয়ে জানতে পারেন বলে তারা বিএসএফকে জানিয়েছেন।
বাসের হেল্পার যাত্রীদের মধ্যে মিশে যাওয়ায় তাকে চেনা যায়নি। আটক হওয়া ওই দুই বাংলাদেশি এবং জব্দকৃত সোনার বিস্কুট পরবর্তী আইনি পদক্ষেপের জন্য পেট্রাপোল কাস্টমস অফিসে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএসএফের ডিআইজি একে আর্য বলেন, ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে চোরাচালান বন্ধে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। তিনি আরও বলেন, চোরাকারবারিরা মাঝে মাঝে বিভিন্ন মাধ্যমে সীমান্ত দিয়ে বিভিন্ন ধরনের সামগ্রি পাচারের চেষ্টা করে। তবে সীমান্তে যেকোনো ধরনের চোরাচালান বন্ধে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী সম্পূর্ণভাবে প্রতীজ্ঞাবদ্ধ।