বিধ্বস্ত সেই প্লেনের ইঞ্জিনে মিলল হাঁসের ডিএনএ, পাখির পালক
অনলাইন ডেস্ক
গত মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জেজু এয়ারের যে প্লেনটি বিধ্বস্ত হয়ে ১৭৯ যাত্রীর প্রাণহানি ঘটেছিল, সেটির ইঞ্জিনে হাঁসের ডিএনএ, রক্তের ছোপ ও পাখির পালক পাওয়া গেছে।
ওই ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি সোমবার প্রাথমিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বিধ্বস্ত জেজু এয়ারের প্লেনটির দুটি ইঞ্জিনেই হাঁসের ডিএনএ, রক্তের ছোপ ও পাখির পালক পাওয়া গেছে।
তবে দক্ষিণ কোরিয়ায় ভয়াবহ এই প্লেন বিপর্যয়ের চূড়ান্ত কারণ কী, তা জানতে কর্তৃপক্ষ এখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। দুর্ঘটনার এক মাস পর দক্ষিণ কোরিয়ার কর্তৃপক্ষের প্রকাশিত ছয় পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেজু এয়ারের বোয়িং ৭৩৭-৮০০ প্লেনের উভয় ইঞ্জিনে বাইকাল টিলসের ডিএনএর অস্তিত্ব মিলেছে। বাইকাল টিলস এক প্রজাতির পরিযায়ী হাঁস; যা শীতকালে দলে দলে দক্ষিণ কোরিয়ায় উড়তে থাকে।
প্রতিবেদনে ল্যান্ডিং গিয়ার মোতায়েন না করে প্লেনটি কী কারণে অবতরণ করেছে এবং ফ্লাইটের ডাটা রেকর্ডার কেন প্লেনের শেষ চার মিনিটে রেকর্ডিং বন্ধ করে দিয়েছে, সে সম্পর্কে কোনও প্রাথমিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেননি তদন্তকারীরা।
গত ২৯ ডিসেম্বর থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার উদ্দেশে ১৮১ যাত্রী নিয়ে যাত্রা শুরু করে জেজু এয়ারের ফ্লাইট ৭সি২২১৬। জেজু এয়ারের এই প্লেনে ১৭৫ জন যাত্রী ও ৬ জন ক্রু ছিলেন। দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে এটি।
স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, প্লেনটি মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করছে। রানওয়েতে প্রবল গতিতে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে দেখা যায় সেটিকে। এ সময় প্লেনের ল্যান্ডিং গিয়ার দেখা যাচ্ছিল না। কিছুক্ষণ ছুটে যাওয়ার পর রানওয়ের শেষ প্রান্তের একটি প্রাচীরে গিয়ে প্রচণ্ড গতিতে আঘাত হানে।
এতে প্লেনের সামনের অংশ দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়ার পাশাপাশি বিস্ফোরণের পর আগুন ধরে যায়। ঘটনাস্থলে কালো ধোঁয়ার বিশাল কুণ্ডলী আকাশে উড়তে দেখা যায়। এই ঘটনায় প্লেনের ১৭৯ আরোহী নিহত হন।
প্লেন দুর্ঘটনার স্থানের নতুন কিছু ছবি প্রকাশ করেছে তদন্ত কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমানবন্দরের প্রাচীরে আঘাত হানার পর প্লেনে আগুন ধরে যায় এবং বিস্ফোরণ ঘটে। প্লেনের উভয় ইঞ্জিনই প্রাচীরের নিচে চাপা পড়ে এবং দুমড়ে-মুচড়ে যাওয়া সামনের অংশটি প্রাচীর থেকে ৩০-২০০ মিটার পর্যন্ত ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়েছিল। সূত্র: বিবিসি, আল-জাজিরা, রয়টার্স