বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে ‘ইনক্লুসন সিম্পোজিয়াম’ অনুষ্ঠিত

অনলাইন ডেস্ক

ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ঢাকার (আইএসডি) আয়োজনে এবং বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের সহযোগিতায় দেশে প্রথমবারের মতো ‘ইনক্লুসন সিম্পোজিয়াম’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের প্রয়োজনের ওপর আলোকপাত করার পাশাপাশি দেশের স্কুলগুলোতে সকল ধরনের শিক্ষার্থীদের অন্তর্ভুক্তি কীভাবে বাড়ানো যায়, এ বিষয়কে কেন্দ্র করে এই ইনক্লুশন সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়। সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে নিজেদের সকল সম্ভাবনার বিকাশ এবং দক্ষতা অর্জনের জন্য মানসম্পন্ন শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ থাকা প্রতিটি শিশুর অধিকার। এই ধারণা থেকেই শুক্রবার আইএসডি ক্যাম্পাসে এ ইনক্লুশন সিম্পোজিয়াম অনুষ্ঠিত হয়।

সিম্পোজিয়ামে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইনক্লুশন এক্সপার্টের প্রধান নির্বাহী, ইন্টারন্যাশনাল ফোরামস অব ইনক্লুশন প্রাকটিশনারসের সভাপতি এবং গ্লোবাল ইনক্লুসিভ টিচিং ইনিশিয়েটিভের প্রতিষ্ঠাতা ড্যানিয়েল সোবেল। সিম্পোজিয়ামে অনুষ্ঠিত দুটি কর্মশালায় নেতৃত্ব প্রদান করেন তিনি। এছাড়াও, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, আঞ্চলিক পর্যায় ও দেশ, ইউনেস্কো, জাতিসংঘ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেছেন তিনি। তিনি ‘এস্টাবলিশিং দ্য ইনক্লুসিভ ক্লাসরুম’ ও ‘হাউ টু ট্যাকল দ্য মোস্ট চ্যালেঞ্জিং সিনারিওস’ শীর্ষক দু’টি কর্মশালা পরিচালনা করেন।

অনেকে ভেবে থাকেন, শ্রেণিকক্ষে অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করা শ্রম ও ব্যয় সাপেক্ষ; কিন্তু বিষয়টি বেশ সহজ এবং শিক্ষকরাই অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পারেন। এই ভাবনাকে কেন্দ্র করেই প্রথম কর্মশালাটি পরিচালনা করা হয় এবং কর্মশালায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা এ ব্যাপারে ধারণা লাভ করেন। তাছাড়া, শ্রেণিকক্ষে প্রয়োগ করার মতো বিভিন্ন ব্যাবহারিক ধারণাও পেয়েছেন অংশগ্রহণকারীরা।
দ্বিতীয় কর্মশালায় আচরণের ওপর আলোকপাত করা হয়। এ কর্মশালায় বিভিন্ন পন্থা অবলম্বনে আচরণগত চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার উপায় নিয়ে আলোচনা করেন ড্যানিয়েল সোবেল। শিক্ষাদানের ক্ষেত্রে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিগুলো নিয়েও আলোচনা করেন তিনি।

সিম্পোজিয়ামে আইএসডি ফ্যাকাল্টি এবং বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধিরা মোট ২৫টি কর্মশালা পরিচালনা করেন। বিভিন্ন এনজিও থেকে অতিথি বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. আশিক সেলিম, কনসালটেন্ট সাইকিয়াট্রিস্ট, পিএইচডব্লিউসি; থুজি গ্রেস, ক্লিনিক্যাল হেড, ইনার সার্কেল প্রাইভেট লিমিটেড; জেইন নাদারাজু, প্রতিষ্ঠাতা, হোয়াইট লজ সার্ভিসেস, প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, এস্পায়ার সেন্টার ফর ইনক্লুসিভ এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং; নাজিশ আরমান ও প্রণয় ভূঁইয়া, সূচনা ফাউন্ডেশন; এবং গণেশ কানাপাথি সহ-প্রতিষ্ঠাতা, দ্য গিল্ড ইন্টারন্যাশনাল কলেজ। এছাড়াও কর্মশালা পরিচালনা করেন কুরি চিসিম, খালিদ আফিফ মেহরান এবং ফারাশা খান, ব্র্যাকের ইসিডি প্রোগ্রাম বিশেষজ্ঞ, অনুষদ সদস্য, ইসিডি প্রোগ্রামে মাস্টার্স এবং মনোবিজ্ঞানী, আইইডি।

আইএসডি থেকে বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টম জনস্টন, লার্নিং সাপোর্ট স্পেশালিস্ট এমওয়াইপি ও ডিপি; সেকাই চিটাওকিরে, সেকেন্ডারি সোশ্যাল ইমোশনাল কাউন্সেলর; শায়লা কবির, লার্নিং সাপোর্ট স্পেশালিস্ট, প্রাইমারি স্কুল; হেদার রেনে স্পিথ, লীড, এমওয়াইপি ও ডিপি ল্যাঙ্গুয়েজ আকুইজিশন, ক্রিস বয়েল, সেকেন্ডারি অধ্যক্ষ; মারিসা সুত্তপা, শিক্ষক; জোমারী ভীনস্ট্রা, শিক্ষক, ইএএল, আর্লি ইয়ার্স; রেবেকা অ্যান চার্চিল, এমওয়াইপি লার্নিং সাপোর্ট স্পেশালিস্ট; জেসিকা বোয়েন, প্রাইমারি কাউন্সেলর; আয়াজ আলম কায়ামী, এমওয়াইপি হিউম্যানিটিস শিক্ষক; এবং হেদার নেসবিট, প্রাইমারি লার্নিং সাপোর্ট স্পেশালিস্ট।

এই আয়োজনের মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীদের সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ধারণা ও কাজ করার সক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের নিয়ে কাজ করা এবং এ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পেশায় নিয়োজিত সবার জন্য এই কর্মশালা পেশাগত বিকাশের একটি অনন্য সুযোগ হিসেবে কাজ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights