বেগুনের কেজি ২ টাকা!

নাটোরের গুরুদাসপুরে অস্বাভাবিকভাবে কমেছে বেগুনের দাম। উপজেলাজুড়ে এ সবজি পাইকারি ২ টাকা এবং খুচরা বিক্রি হচ্ছে ৫ টাকা কেজিতে। রবিবার উপজেলার সবচেয়ে বড় কাঁচাবাজারের মোকাম চাঁচকৈড় হাট ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

এক সপ্তাহ আগে একই বাজারে বেগুন প্রতি কেজি ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। একই চিত্র দেখা গেছে উপজেলার খুবজীপুর, কাছিকাটা, ধারাবারিষা, মশিন্দা ও নাজিরপুরসহ বিভিন্ন হাট-বাজারে।

চাঁচকৈড় হাটের সবজি ক্রেতা মকছেদ আলী জানান, সকালে বাজারে গিয়ে দেখি বেগুনের দাম অস্বাভাবিক কম। মাঝারি মানের এক বস্তা (৪০ কেজি) বেগুন কিনেছি ৫০ টাকায়। কম দামে সবজি কিনতে পেরে খুশি তিনি।
একই হাটে বেগুন বিক্রি করতে এসেছেন পৌর শহরের আনন্দ নগর মহল্লার বেগুন চাষি মোস্তফা। তিনি জানান, হাটে ২ মণ বেগুন বিক্রি করতে এসেছিলাম। আড়তগুলোতে দাম কম দেখে খুচরা এক মণ ( ৪০ কেজি) বিক্রি করেছি ১০০ টাকায়। অবশিষ্ট এক বস্তা বাসায় ফিরিয়ে এনে গ্রামের মাদ্রাসার এতিম শিক্ষার্থীদের খাবার জন্য দান করে দিয়েছি।

তিনি আরও জানান, তিনি এক বিঘা (৩৩ শতাংশ) জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। তার মতো সব চাষিই রমজান মাসকে লক্ষ্য করে উৎপাদন করেছেন। তবে খরচ না ওঠায় হতাশ তিনি।

বেগুন চাষি ছাবলু মিয়া বলেন, এক বিঘা জমিতে বেগুন আবাদ করতে ১০-১২ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। ৩ হাজার টাকাও বিক্রি করতে পারি নাই। দাম কম বলে ক্ষেতের বেগুন ক্ষেতেই রেখেছি। লাভ তো দূরের কথা, হাটে বেগুন নিয়ে আসার ভ্যান ভাড়াও ওঠে না।

চাঁচকৈড় হাটের মেহেদী আড়তের কর্ণধার শাহিনুর শেখ জানান, সকালে তার আড়তে ৫০ কেজি ওজনের ২০০ বস্তা বেগুন এসেছে। অস্বাভাবিক আমদানি হলেও পাইকার খুবই কম। এ কারণে প্রতি বস্তা বেগুন ৬০ টাকা থেকে ১০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশীদ জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বেগুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। বাজারে চাহিদার তুলনায় বেশি বেগুন ওঠায় চাষিরা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এলাকায় বেগুন সংরক্ষণের জন্য হিমাগার না থাকায় এসব বেগুন সংরক্ষণেরও সুযোগ নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights