ব্রিটেনে চার দিনের অফিস স্থায়ী করেছে অনেক প্রতিষ্ঠান

অনলাইন ডেস্ক

যুক্তরাজ্যে চার দিনের অফিস স্থায়ী করেছে অনেক প্রতিষ্ঠান। এক বছর আগে ট্রায়াল হিসেবে চার দিনের অফিস চালু করে দেশটির অনেক প্রতিষ্ঠান। তবে এক বছর পরে এসেও ট্রায়ালে অংশ নেওয়া দেশটির অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান এখনেও কর্মীদের জন্য চার দিনের কর্মসপ্তাহ চালু রেখেছে। শুধু তা–ই নয়, অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠান এই পরিবর্তনকে স্থায়ী করেছে।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০২২ সালের জুন থেকে ডিসেম্বর— এই ছয় মাসের জন্য যুক্তরাজ্যের ৬১টি প্রতিষ্ঠানে চার দিনের কর্মসপ্তাহ পরীক্ষামূলকভাবে চালু হয়। সপ্তাহে কম দিন কাজ করলেও তাদের বেতনে কোনও হেরফের হয়নি।

ট্রায়ালের আয়োজক প্রতিষ্ঠানের প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাজ্যে ট্রায়ালে অংশ নেওয়া সংস্থাগুলোর মধ্যে অন্তত ৮৯ শতাংশ সংস্থা এখনও চার দিনের কর্মসপ্তাহ চালু রেখেছে। অন্তত ৫১ শতাংশ সংস্থা ২০২৩ সালের শেষের দিকে চার দিনের কর্মসপ্তাহকে স্থায়ী করেছে। আর দুটি সংস্থা আয়োজক সংস্থার গবেষণায় এ ব্যাপারে কোনও সাড়া দেয়নি।
২০২২ ট্রায়ালে অংশ নেওয়া ৬১টি সংস্থার অর্ধেক সংস্থা বিপণন ও বিজ্ঞাপন; পেশাদার পরিষেবা ও অলাভজনক খাতের। বাকিগুলো নির্মাণ, উৎপাদন, খুচরা, স্বাস্থ্যসেবা, শিল্প, বিনোদনসহ বিভিন্ন শিল্পের পরিসরে বিস্তৃত।

অটোনমি নামের একটি থিঙ্ক ট্যাংক গত বুধবার গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। অটোনমি অলাভজনক সংস্থা ফোর ডে উইক গ্লোবাল ও ফোর ডে উইক ইউকের সঙ্গে যৌথভাবে কেমব্রিজ, অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় ও বোস্টন কলেজের গবেষকদের নিয়ে ২০২২ সালে চার দিনের কর্মসপ্তাহের ট্রায়াল চালু করে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কর্মঘণ্টা হ্রাসের প্রভাব কর্মীদের ও সংস্থাগুলোর জন্য অত্যধিক উপকারী হয়েছে। ট্রায়াল শেষে কর্মীরা ভালো শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, বৃহত্তর কর্মজীবনের ভারসাম্য, সাধারণ জীবনে সন্তুষ্টি ও কম ক্লান্তির কথা জানিয়েছেন। এই উন্নতির ধারা এক বছর ধরে বজায় রাখা হয়েছে।

বোস্টন কলেজের সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক জুলিয়েট স্কোর ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারী সংস্থাগুলোর কর্মীদের নিয়ে জরিপ করেছিলেন। তিনি বলেছেন, এই ফলাফল স্বল্পমেয়াদি নয়। এর প্রভাবগুলো বাস্তব ও দীর্ঘস্থায়ী।

২৮টি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক ও প্রধান নির্বাহীরা এ বিষয়ে অতিরিক্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে রাজি হয়েছেন। সবাই বলেছেন, চার দিনের কর্মসপ্তাহ তাদের কোম্পানিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। স্টাফ টার্নওভার অর্ধেক প্রতিষ্ঠানে নেমে এসেছে, প্রায় এক-তৃতীয়াংশ। নতুন এই ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্যভাবে নিয়োগের উন্নতি করেছে এবং ৮২ শতাংশ কর্মীর সুস্থতার ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

অটোনমির প্রতিবেদনে মিটিং, কাজের যোগাযোগ ও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে নীতি সংশোধনসহ চার দিনের কর্মসপ্তাহ টিকিয়ে রাখার জন্য সংস্থাগুলো যে পদ্ধতি ব্যবহার করেছে, তা–ও তুলে ধরা হয়েছে। সূত্র: সিএনএন, দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights