ব্রিটেনে ভোট চ্যালেঞ্জে বাংলাদেশি রুশনারা আলী

আ স ম মাসুম, যুক্তরাজ্য
রাজনৈতিক জীবনে এমন চ্যালেঞ্জের মুখে আর পড়েননি রুশনারা আলী! ইরাক ইস্যু যেভাবে তার পূর্বসূরি ওনা কিংকে পরাজিত করেছিল, ঠিক সেই রকম চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছেন তিনি। গাজার যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে পার্লামেন্টে ভোটদান থেকে বিরত থাকার খেসারত দিতে হচ্ছে রুশনারা আলীকে। তিনি প্রবল প্রশ্নের মুখে পড়ছেন বিভিন্ন এলাকায় প্রচার চালাতে গিয়ে। দুজন ট্রেইনড বডিগার্ড নিয়ে যাচ্ছেন ক্যাম্পেইনে। গাজা ইস্যুতে এখন পর্যন্ত রুশনারা আলীকে চ্যালেঞ্জ দিয়েছেন অন্তত চারজন বাংলাদেশি প্রার্থী।

১৯৯৭ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত ওনা কিং ছিলেন বাংলাদেশি অধ্যুষিত বেথনালগ্রিন বো আসনের এমপি। ইরাক যুদ্ধে লেবার পার্টির ভূমিকার কারণে ২০০৫ সালের জাতীয় নির্বাচনে মুসলিম ভোটার এলাকায় মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে লেবার পার্টি। স্কটল্যান্ড থেকে জর্জ গ্যালওয়ে নামের একজন লেবার এমপি এসে ঘোষণা দেন ইরাক যুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে তিনি লেবার পার্টি ত্যাগ করেছেন। রেসপেক্ট পার্টি নামে নতুন রাজনৈতিক দল সৃষ্টি করে ইয়াং মুসলিমদের আকৃষ্ট করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি লেবার পার্টির সেইফ সিট খ্যাত বেথনালগ্রিন বো আসনে ওনা কিংকে পরাজিত করেন। ২০১০ সালে জর্জ গ্যালওয়েকে হারিয়ে লেবারের সেই হারানো আসন পুনরুদ্ধার করেন ব্রিটিশ বাংলাদেশি রুশনারা আলী। ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এমপি রুশনারা আলী। সারা পৃথিবীর বাংলাদেশিদের গর্বিত করেছিলেন তিনি।

এবারের জাতীয় নির্বাচনে যেন সেই ২০০৫-এর নাটক মঞ্চস্থ হতে চলেছে। রুশনারা আলীর নির্বাচনি আসনের বাউন্ডারি পরিবর্তন হয়েছে। বেথনালগ্রিনের সঙ্গে স্টেপনি এলাকাজুড়ে দেওয়া হয়েছে। আর বো এলাকাকে নিয়ে নেওয়া হয়েছে স্ট্রার্টফোর্ডের সঙ্গে। এতে রুশনারা আলীর ভোট ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার ভোট বেরিয়ে গেছে। নতুন বাউন্ডারিতে বেশির ভাগ বাংলাদেশি ভোটারের মধ্যে আলোচনা, সমালোচনা, গাজা ইস্যুতে রুশনারা আলীর ভূমিকা। ২০২৩ সালে ১৫ নভেম্বর ফিলিস্তিনে যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে পার্লামেন্টে ভোটাভুটিতে রুশনারা আলী ভোটদান থেকে বিরত ছিলেন। এই বিষয়টি এখন বিরোধীপক্ষের প্রচারণার মূল অস্ত্র। রুশনারা আলীর বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত প্রার্থী হয়েছেন লিবডেম থেকে রাবিনা খান, স্বতন্ত্র প্রার্থী ইমাম আজমল মাশরুর, আইনজীবী ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আকুঞ্জি ও ব্যারিস্টার শাম উদ্দিন। এর মধ্যে রাবিনা খানের দীর্ঘ রাজনৈতিক ক্যারিয়ার রয়েছে। তিনি তার ক্যাম্পেইনে গাজা ইস্যুতে তার পার্টির ভূমিকা, স্থানীয় সমস্যা নিয়ে তিনি কী করবেন ইত্যাদি বিষয় তুলে ধরছেন। বাকি তিন প্রার্থী গাজা ইস্যুকে কেন্দ্র করেই তাদের প্রচারণায় নেমেছেন।
রুশনারা আলী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেছেন, ‘আমার ও আমার পার্টির বিরুদ্ধে ভুল তথ্য ছড়ানো হচ্ছে। আমরা সব সময়ই এই যুদ্ধ বন্ধের পক্ষে। আমরা আন্তর্জাতিকভাবে কাজ করছি এই যুদ্ধ বন্ধের জন্য। আমি নিজে লেবার পার্টির ফ্রেন্ডস অব ফিলিস্তিন গ্রুপের এমপি। আমার বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা চলছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Verified by MonsterInsights