ভারতে অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে ১২ বাংলাদেশি গ্রেফতার
দীপক দেবনাথ, কলকাতা
অবৈধভাবে বসবাসের অভিযোগে ভারতে ১২ জন বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করেছে স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এদের মধ্যে মুম্বাইয়ের কংগাঁও গ্রাম থেকে ৯ জন ও দিল্লিতে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।
মুম্বাই থেকে গ্রেফতার প্রত্যেকেই কংগাঁও গ্রামের কাছে একটি অর্কেস্ট্রা বারে নাচ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। বৃহস্পতিবার অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই নারীরা বৈধ ভ্রমণ নথি ছাড়াই ঠাকুর পাড়া এলাকায় একটি আস্তানায় অবৈধভাবে বসবাস করছিলেন। গ্রেফতার বাংলাদেশি নাগরিকদের নথিপত্র যাচাই না করেই নিজের প্রেমিসেসে অবৈধ বসবাসের অনুমতি দেওয়ার জন্য ওই আস্তানার মালিক দীপক গঙ্গারাম ঠাকরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অতিরিক্ত পুলিশ ইন্সপেক্টর রাজ মালি জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতেই বৃহস্পতিবার ঠাকুর পাড়া এলাকায় নিউ মারাঠি স্কুলের পেছনের ওই আস্তানায় অভিযান চালায় ভিবান্ডি ক্রাইম ব্রাঞ্চের সদস্যরা। আটককৃত নারীদের কেউই ভারতে বসবাসের বৈধ নথি দেখাতে পারেননি। তাদের কাছ থেকে ৭০ হাজার রুপি মূল্যের ছয়টি মোবাইল ফোন, বাংলাদেশি পাসপোর্ট ও অন্য নথি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করে গত পাঁচ বছর ধরে ভিবান্ডি এলাকায় বসবাস করছিল ওই বাংলাদেশি নারীরা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’ অধীনে পাসপোর্ট আইন এবং ফরেন ন্যাশনাল আইনের বিভিন্ন ধারায় কংগাঁও পুলিশ থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এদিকে, মহারাষ্ট্রে ক্রমাগত বাংলাদেশি ও উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলো থেকে আগত বাসিন্দাদের অবস্থানের ঘটনায় যথেষ্ট উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্যটির উপ মুখ্যমন্ত্রী অজিত পাওয়ার। এক সরকারি অনুষ্ঠান থেকে তিনি বলেন, পুণে শহরের ট্রাফিক এবং যানজট সমস্যা ও অত্যন্ত প্রকট হয়ে দেখা দিয়েছে। আগামী ২০৫৪ সালের মধ্যে পিম্প্রি চিঞ্চোয়ার সহ পুণেতে জনসংখ্যা ২ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। এই জনসংখ্যা মোকাবিলার করার পর্যাপ্ত ক্ষমতা আমাদের নেই। জনসংখ্যা দুই কোটিতে পৌঁছে গেলে এই সব মানুষদের খাবার পানি কীভাবে যোগাবো?
এদিকে, অবৈধ বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্তকরণে দিল্লিতে ধরপাকড় চলছেই। বিশেষ অভিযান চালিয়ে দিল্লি থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভুয়া ভারতীয় পাসপোর্ট, আধার কার্ড, ভোটার কার্ড সংগ্রহ করে তারা দিল্লির পাহাড়গঞ্জ এলাকায় বসবাস করছিল বলে অভিযোগ।
দিল্লি পুলিশের ডিসিপি (মধ্য) এম হর্ষবর্ধন জানিয়েছেন, অবৈধ অনুপ্রবেশকারীদের শনাক্তকরণের যে অভিযান চালানো হয়েছে, তাতে তিনজন বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা হলেন-জোহরা খাতুন ওরফে সুইটি সরকার, তার মেয়ে সাইদা আক্তার পুষ্প ওরফে পুষ্প সরকার ও একটি নাবালক সন্তান। তাদের সকলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। তাদের আস্তানায় অভিযান চালিয়ে দুইটি ভারতীয় পাসপোর্ট, দুইটি বাংলাদেশি পাসপোর্ট, পাঁচটি আধার কার্ড, দুইটি প্যান কার্ড, একটি ভোটার কার্ড, বিভিন্ন ব্যাংকের নথি এবং বাংলাদেশের একটি স্কুলের এসএসসি পরীক্ষার সনদ উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে গত ২০ বছর ধরে দিল্লিতে বসবাস করছেন জোহরা।